পৃথিবীজুড়ে করোনার দাপট অব্যাহত। গোদের ওপর বিষফোঁড়া করোনার নতুন স্ট্রেন ওমিক্ৰণ। 2020 -র পর করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে বেসামাল গোটা পৃথিবীবাসী। দিনে দিনে বাড়ছে মৃত্যুমিছিল। কিন্তু এর শেষ কোথায়? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
সারা দেশের মত এ রাজ্যেও বিরামহীন ভাবে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সংক্রমণে কিছুটা লাগাম টানতে জারি হয়েছে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ। তবে নতুন একটি গবেষণা বলছে, ওমিক্রন খুব দ্রুত মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লেও এই ভাইরাসের মারণ ক্ষমতা তুলনায় অনেকটাই কম।
গবেশনায় আরও বলা হয়েছে, ওমিক্রন আক্রান্তের দরকার নেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করেই চিকিত্সকরা বলছেন, ওমিক্রন নিয়ে চিন্তা কিছুটা হলেও কমল। পাশাপাশি তাঁদের বক্তব্য অতিমারীর শেষ পর্যায়ে আমরা পৌঁছে গিয়েছি।
সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজিস্ট মোনিকা গান্ধী বলেন, আমরা অনেক দূর চলে এসেছি। এই পর্যায়টা আগের অতিমারীর তুলনায় আলাদা। আমাদের সঙ্গে ভাইরাস বাঁচবে। তবে আশা এই স্ট্রেনের থেকে পাওয়া ইমিউনিটি আমাদের রক্ষা করবে। ওমিক্রণ গোটা পৃথিবীর নতুন ত্রাস এই ভাইরাসটি গত বছরের নভেম্বর মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম পাওয়া যায়। এরপর বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, স্পাইক প্রোটিনে অনেক মিউটেশন থাকায় ওমিক্রন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর হয়েছেও তাই। কয়েকদিনে প্রায় গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে গিয়েছে এই করোনা ভাইরাস।
অপরদিকে কেপটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজিস্ট ওয়েন্ডি বার্জার বলেন, ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রণে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির আশঙ্কা অনেকটাই কম। এমনকী রোগীর খারাপ দিকে যাওয়ার আশঙ্কাও কম। এই ভাইরাস সেভাবে ফুসফুসকে আক্রান্ত করতে পারছে না।
এই প্রসঙ্গে এ রাজ্যের চিকিৎসকরা কী বলছেন? আরজিকর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিত্সক ডা: জ্যোতির্ময় পাল বলেন, রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। তবে তারপরও কিন্তু হাসপাতাল ভর্তি খুব কম। বেশিরভাগ আক্রান্তেরই মৃদু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। বাড়িতেই হয়ে যাচ্ছে চিকিত্সা। এই ভাইরাস এবার এপিডেমিক থেকে এনডেমিক পর্যায়ে নেমে যাবে। এই ভাইরাস সাধারণ কিছু সংক্রমণ নিয়ে আমাদের মধ্যে থাকবে। তিনি বেশ সতর্ক করেই বলেন, মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। আপাতত কোভিড বিধি মেনে চলুন। সুরক্ষিত থাকুন।
তাই সবশেষে বলাই যায়, করোনার নতুন স্ট্রেন ওমিক্ৰণ আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা যতই তীব্র গতিতে বাড়ুক না কেন, তা যে আগের দুটি ঢেউয়ের মত ততটা প্রাণঘাতী নয় এবং করোনা অতিমারীর শেষ পর্যায়ে আমরা পৌঁছে গিয়েছি সেটা বলাই যায়।