আগামী জুলাই মাসের গোড়াতেই রাজ্যে নিস্তেজ হবে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। স্বাস্থ্যদপ্তরের শীর্ষস্তরে বিশেষজ্ঞরা এমনই রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। দপ্তরের পদস্থ সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞ দল জানিয়েছে, করোনার গতিপ্রকৃতির দিকে তারা নিবিড়ভাবে লক্ষ্য রাখছে। বাংলায় কোনও নতুন বা ভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়া মাত্রই রাজ্য সরকারকে জানানো হবে।
আগামী ৪ জুলাই স্থিমিত হতে পারে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। ভাইরাসের বর্তমান গতিপ্রকৃতি দেখে তাঁদের ধারণা, বড়জোর আরও দু-তিন বাড়তে পারে এই সময়সীমা। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রতি মাসে কোন কোন ভাইরাস স্ট্রেইন বাংলায় সক্রিয় থেকেছে, তার বিস্তারিত রিপোর্টও তাঁরা জমা দিয়েছেন। তাঁরা জানান, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ নিস্তেজ হলেও রাজ্যজুড়ে দৈনিক করোনা সংক্রমণ কিছু না কিছু হতেই থাকবে।
গত পাঁচদিনে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ৮৭৯, ১ হাজার ৮৫২, ১ হাজার ৯২৫, ১ হাজার ৯৩৩ ও ১ হাজার ৮৯৪। বিশেষজ্ঞদের দাবি, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে তা কমে হাজারের আশপাশে থাকতে পারে। স্বাস্থ্যদপ্তরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘ইউরোপ, আমেরিকা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, দ্বিতীয় ঢেউ একেবারে তলানি ঠেকার আগেই চলে এসেছে তৃতীয় ঢেউ। ফলে দৈনিক সংক্রমণ শূন্যতে এসে ঠেকবে আর তৃতীয় ঢেউ আসবে, এমন সহজ সমীকরণের মতো কিছু ঘটবে না।’
তবে, তৃতীয় ঢেউ নিয়ে মানুষের উৎকণ্ঠা কিছুটা কমেছে এইমস অধিকর্তা ডাঃ রণদীপ গুলেরিয়ার কথায়। এদিন এক টিভি চ্যানেলকে তিনি জানান, ‘দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো তৃতীয় ঢেউ শক্তিশালী হবে না। তারপরও বিভিন্ন ঢেউ আসতে পারে। কিন্তু কোনওটাই অত শক্তিশালী হবে না।’ তাঁর মতে, যতদিন না হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হচ্ছে বা অধিকাংশ মানুষ টিকা পাচ্ছেন, ততদিন একের পর এক ঢেউ আসতেই থাকবে। তাই করোনাবিধি শিকেয় তোলা যাবে না। তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ অনেক বেশি হবে, এই তত্ত্বকে আগেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন এইমস শীর্ষকর্তা। এদিন তিনি জানান, দ্বিতীয় ঢেউয়ে বহু স্বাস্থ্যবান শিশুকে হাসপাতালে ভর্তিই করতে হয়নি। বাংলায় সংক্রমণ কমায় সরকারের সঙ্গে করোনা চিকিৎসায় যুক্ত বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা কমাচ্ছে স্বাস্থ্যদপ্তর। ২৬টি হাসপাতালের ৮০০টি বেড কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।