দেশের প্রায় ৪০ কোটি নাগরিকের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। প্রতি তিনজনের মধ্যে কার্যত একজন সংক্রমণের বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে। আইসিএমআরের চতুর্থ সেরোলজিক্যাল সার্ভেই বলছে এই কথা। নিয়ন্ত্রিত লকডাউন আর দ্রুত টিকাকরণই রুখে দিতে পারে করোনার সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউ। তাই আসন্ন উৎসব মরশুমের দিকে তাকিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সংযম, সাবধানতা আর সচেতনতার অস্ত্রেই মোকাবিলা করা যেতে পারে কোভিডের ভাইরাসকে।
আইসিএমআর বলছে, ভবিষ্যতে আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন ভ্যারিয়েন্টে এই ভাইরাস না এলে ভয় নেই। লকডাউন নিয়েও প্রবল কড়াকড়ির দরকার নেই। তবে নজর দিতে হবে জেলাস্তরে। দেখতে হবে কোন জেলার কোন অংশে প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ তেমন ছড়ায়নি। তাই পশ্চিমবঙ্গের সার্বিক সেরোপজিটিভিটির হার ৬০.৯% হলেও জেলার দিকে লক্ষ রাখারই পরামর্শ আইসিএমআরের।
‘ইমর্পটেন্স অব ডিস্ট্রিক্ট লেভেল ডেটা ফর প্রিপায়ার্ডনেস অব থার্ড ওয়েভ অব কোভিড-১৯’ শীর্ষক একটি বিশেষ মডেল তৈরি করেছেন আইসিএমআরের মহামারীবিদ্যা বিভাগের বিজ্ঞানী ডা. সন্দীপ মণ্ডল। ওই মডেলেই কোভিড সংক্রমণের তথ্যকে হাতিয়ার করে সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউ প্রসঙ্গে আলোকপাত করেছেন তিনি। তাঁর কথা মতো, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের দিকে তাকিয়ে যেসব রাজ্য আগেভাগেই কড়া লকডাউন করেছে, তারা এখন সমস্যায় পড়ছে। যেমন কেরল। মৃত্যুর হার কম হলেও বাড়ছে সংক্রমণ।
তাই নিয়ন্ত্রিত লকডাউনের পক্ষেই সওয়াল করেছেন ডা. সন্দীপ মণ্ডল। তা নাহলে আদতে ‘বর্জ্র আটুনি ফস্কা গেরো’ হবে। তবে যেসব জেলায় আগের ঢেউয়ে তেমন সংক্রমণ ছড়ায়নি, ভবিষ্যতে সেখানে ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাই জেলাস্তরে কোভিড রোখার পরিকল্পনায় জোর দিতে হবে। বাড়াতে হবে টিকাকরণ। স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, টিকাকরণ কর্মসূচিতে কেন্দ্রের টার্গেট, ১৮ ঊর্ধ্ব দেশের ৯৪ কোটি নাগরিককে ভ্যাকসিন দেওয়া। তবে এখনও পর্যন্ত দুটি ডোজের সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন পেয়েছেন মাত্র ১৫.৫ শতাংশ। ফলে এই হার দ্রুত না বাড়ালে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।