খেলাধুলা লিড নিউজ

Shooting World Cup: বিশ্বকাপে স্বর্ণপদক বাংলার মেয়ে মেহুলির

দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে রাইফেল শুটিংয়ে স্বর্ণপদক জিতে অনন্য নজির গড়েন হুগলির বৈদ্যবাটির মেহুলি ঘোষ। যদিও তার এই সাফল্যের শিখরে পৌঁছনোর পথটা খুব একটা মসৃণ ছিল না। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল না হওয়ায় অনেক বাধা পেরিয়ে রাইফেল শুটিংয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন মেহুলি।

বাবা নিমাই ঘোষ একটি আধা সরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তাই তার পক্ষে খেলার খরচ চালানো সম্ভব ছিল না। শেষ পর্যন্ত দিদিমা মঞ্জু পাল তার খেলার বেশ অনেকটাই খরচ সামলাতেন। প্রথমে শ্রীরামপুর রাইফেল শুটিং ক্লাবে তারপরে কলকাতার নিউটাউনে জয়দীপ কর্মকারের অধীনে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু হয় মেহুলির।

নিমাইবাবু জানান, মেয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য মা মিতালি ঘোষ নিজের গয়না বন্ধক দিয়ে রাইফেল কিনে দেন। নিউটাউনে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় নিমাই বাবু সকালে অফিসে যাওয়ার সময় নিয়মিত স্ত্রী ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বেরোতেন। প্রায় তিন বছর ধরে মেহুলির মা অ্যাকাডেমির বাইরে চায়ের দোকানে বসে থাকতেন। রাতে নিমাইবাবু অফিস থেকে বাড়ি ফেরার সময় স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ফিরতেন।

পরবর্তীতে ২০২১-এ মেহুলি হায়দ্রাবাদে গগন নারাংয়ের শুটিং অ‌্যাকাডেমিতে অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। এই প্রশিক্ষণে অনেকটাই উন্নতি করে মেহুলি। মেয়ের এই সাফল্যে মা ও বাবা দুজনেই খুব খুশি। মঙ্গলবার ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের ব্যক্তিগত ইভেন্টে অল্পের জন্য ফাইনালে কোয়ালিফাই না করতে পারায়, মিতালি দেবী আগে কি হয়েছে তাভুলে পরের ইভেন্টের জন্য মনঃসংযোগ করতে বলেন। মায়ের এই কথায় মেহুলি অনেকটাই অনুপ্রাণিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত বুধবার তুষার মানকে সঙ্গে নিয়ে মিক্স ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিতে নজির গড়েন তিনি। যা নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছে বাংলা।

জানা গেছে, মাত্র তেরো বছর বয়সে রাইফেল শুটিং -এ হাতেখড়ি মেহুলির। ২০১৭য় ন্যাশনাল ইউথ জুনিয়ার এন্ড সিনিয়ার চ্যাম্পিয়নশিপে একসঙ্গে ন’টি মেডেল জিতে চ্যাম্পিয়ন হন মেহুলি। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

অলিম্পিকে অভিনব বিন্দ্রাকে দেখেই মেহুলির রাইফেল শুটিং শেখার ইচ্ছা শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে। তারপর বহু বাধা বিপত্তি পেরিয়ে তার পরিবারের সহযোগিতায় আজ সে সাফল্যের চরম শিখরে পৌঁছেছেন। তাই পরিস্থিতির চাপে দেবে না গিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম ও সাহসের সাথে এগিয়ে চললে সাফল্য নিশ্চিত; যা আরও একবার প্রমাণিত হল মেহুলির হাত ধরে।