জীবনের লড়াই শেষ। জাতীয় রাজনীতির চাণক্য, ভারতরত্ন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রয়াত। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। সোমবার প্রণববাবুর মৃত্যুসংবাদ দিয়েছেন তাঁর ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। টুইট করে অভিজিৎবাবু লেখেন, ‘চিকিৎসকদের সবরকম চেষ্টা আর আপনাদের প্রার্থনার পরেও গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমার বাবা শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় কিছুক্ষণ আগে মারা গিয়েছেন।’
গত ৯ আগস্ট বাড়ির বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। তারপর থেকেই দিল্লির সেনা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। স্নায়ুঘটিত সমস্যা দেখা দেওয়ায় গত ১০ আগস্ট তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। ১৩ আগস্ট থেকে কোমায় ছিলেন তিনি। অস্ত্রোপচারের আগে তাঁর শরীরে করোনা সংক্রমণও ধরা পড়েছিল।
২১ দিন হাসপাতালে থাকলেন প্রণববাবু। চিকিৎসায় মাঝেমধ্যে সাড়া দিলেও বেশিরভাগ সময়েই তাঁর স্বাস্থ্যের ক্রমশ অবনতি হয়েছে। সোমবার সকালের বুলেটিনে দিল্লির সেনা হাসপাতাল থেকে জানানো হয় যে ফুসফুসে সংক্রমণের জেরে তাঁর সেপটিক শক দেখা দিয়েছে। ফুসফুসের সংক্রমণ ছাড়াও কিডনি সমস্যারও চিকিৎসা চলছিল।
বাংলা কংগ্রেস দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরু। সেই সময় রাজ্য সভার সদস্যও হয়েছিলেন তিনি। তারপর ইন্দিরা গান্ধীর সময় থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন বহু বার। অর্থ, প্রতিরক্ষা ও বিদেশ মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন কৃতিত্বের সঙ্গে। যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন। দেশে বিদেশে বিভিন্ন সমস্যায় পরামর্শদাতার ভূমিকায় প্রণববাবুর তুলনা ছিল না। তিনি ছিলেন দেশের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি।
প্রণববাবুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা দেশে। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ সকলেই শোকপ্রকাশ করেছেন প্রণববাবুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ লিখেছেন, ‘ওঁর প্রয়াণ এক যুগের সমাপ্তি। দেশ এক যোগ্য সন্তানকে হারাল।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন,’দেশের উন্নতিতে তাঁর বৈপ্লবিক ভুমিকা ছিল।’ শোক জ্ঞাপন করেছেন বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রীও। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রয়ানে সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক। কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসে একদিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।