করোনা ভাইরাসে চাপ বেড়েছে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে। তারই সুযোগ নিয়েছে প্রতারকরা। এবার তেমনই এক চক্রের হদিশ মিলল খাস কলকাতায়। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জিএনএম নার্সিং স্কুলে ভর্তির টোপ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে তাঁরা। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষার সই পর্যন্ত জাল করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে নার্সিংয়ের জিএনএম পাঠ্যক্রমে ভর্তির ভুয়ো মেধাতালিকাও।
এভাবে প্রতারণার শিকার প্রায় ২০০ তরুণী।এমনকী জাল কাগজপত্রে ওয়েস্ট বেঙ্গল নার্সিং কাউন্সিলের নামও ব্যবহার করেছে প্রতারকরা। প্রতারিত তরুণী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন জানান, নিজেদের ‘মেডিক্যালের কর্মী’ দাবি করেছিল এই প্রতারকরা। টোপ দেওয়ার সময় কাউকে কাউকে সরকারি সচিত্র পরিচয়পত্রও দেখানো হয়। সেগুলি মেডিক্যাল কলেজের অন্য কর্মীদের পরিচয়পত্র। এখানকার কর্মীদেরই একাংশ গোটা বিষয়টি ডেপুটি সুপার, সুপার এবং অধ্যক্ষার নজরে আনেন। অধ্যক্ষা ডাঃ মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওইসব কাগজ দেখেছি। ওরা আমার সই জাল করেছে। সুপারকে পুলিসে অভিযোগ জানাতে বলব। আমরাও তদন্ত করছি।’
এদিকে মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে দেখা যায় ছাত্রীদের নাম, জন্মের তারিখ, জাতি, কম্বাইন্ড র্যাঙ্ক, র্যাঙ্ক এইভাবে কিছুটা সরকারি আদলে ভুয়ো মেধাতালিকা বানিয়েছে প্রতারকরা। হাসপাতালের ভিতরেই তারা তরুণীদের সঙ্গে দেখা করে। নিজেদের মেডিক্যালের কর্মী পরিচয় দেয়। আস্থা অর্জনের পরই দফায় দফায় অনলাইনে টাকা নেওয়া শুরু করে। এই প্রতারকদের একাধিক পরিচিত মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন এবং বর্তমান কর্মী বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রতারিতদের মধ্যে অন্যতম কাশীপুরের বাসিন্দা নেহা সিং। তিনি জানান, ‘আমি ইতিমধ্যেই প্রাইভেটে এএনএম পড়ছি। জিএনএম পড়তে মেডিক্যালে ভর্তি করিয়ে দেবে—এই দাবি করে প্রতারকরা দফায় দফায় ৫৪ হাজার টাকা নিয়েছে। সন্দেহ হওয়ায় সুপারের সঙ্গে দেখা করে সবটা জানাই। উনি জানান, এটা প্রতারণাচক্র। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।’