এক মাসের বেশি সময় ধরে চীনজুড়ে চলছে কয়লা ও বিদ্যুৎ সমস্যা। একইভাবে এবার ভারতেও শুরু হয়েছে কয়লা সঙ্কট। এই প্রবণতা আর কিছুদিন চললে দেশে বিদ্যুৎ সঙ্কটের সম্ভাবনা প্রবল। আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম আকাশ ছোঁয়ায় বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আর তাই দেশের বাজারে কয়লার চাহিদাও এক ধাক্কায় ভেঙে দিয়েছে সব রেকর্ড।
ভারত যে দুই রাষ্ট্র থেকে বেশি কয়লা আমদানি করে, সেই অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় কয়লার দাম অন্তত ৫০ শতাংশ বেড়েছে। কোল ইন্ডিয়ার সম গুণমানের কয়লা সাতগুণ বেশি দামে বিক্রি করছে ইন্দোনেশিয়া। এমনকী, ভারতে যারা কোল ইন্ডিয়ার থেকে সস্তায় কয়লা কেনে, এমন বহু সংস্থাই চড়া দামে বিক্রির পন্থা নিয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে, দেশের কয়লাচালিত ১৩৫টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সিংহভাগেরই ভাঁড়ারে আর মাত্র তিনদিনের কয়লা মজুত রয়েছে।
অথচ বিদ্যুৎ মন্ত্রকের নির্দেশিকা, সর্বত্র কয়লাচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিটে অন্তত দু’সপ্তাহের কয়লা স্টকে রাখতে হবে। আমদানি একপ্রকার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই স্টক কমতে কমতে এখন বিপজ্জনক অবস্থানে। কয়লা উৎপাদন এবং আমদানি অবিলম্বে বাড়ানো না গেলে দেশজুড়ে বিদ্যুৎ সঙ্কট তৈরির চরম আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঠিক যা চলছে চীনে। ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা উৎপাদন ক্ষেত্রেও। আর তাই উদ্বিগ্ন কেন্দ্র।
আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে দেশের শিল্প উৎপাদন ইউনিটগুলিতে বিদ্যুতের চাহিদা এক ধাক্কায় দু’-তিনগুণ বেড়েছে। কারণ, স্বাভাবিকতায় ফিরতে থাকা উৎপাদন ইউনিট এবং আসন্ন উৎসবের মরশুম। অটোমোবাইল বা সিমেন্ট— বিপুল বেড়েছেবিদ্যুতের চাহিদা। বিশেষ করে অটোমোবাইল ক্ষেত্রে অর্ডার বাড়ছে জুলাই থেকে। ফলে কয়লার অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন না হলে উপায় থাকবে একটাই—রাজ্যে রাজ্যে বিদ্যুৎ ছাঁটাই।