দেশ লিড নিউজ

এনআরসি:‌ তালিকার বাইরে ২ লক্ষ বাঙালি

অসমের দু’লক্ষ বাঙালির নাগরিকত্ব পাওয়া কার্যত অনিশ্চিত! ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল জানিয়ে দিল, জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) খসড়া তালিকাই চূড়ান্ত। এনআরসি কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে নাকি সেকথা স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে। অথচ খোদ নরেন্দ্র মোদী সরকার খসড়া তালিকায় এখনও অনুমোদন দেয়নি। তাহলে কীসের ভিত্তিতে সেটিকে চূড়ান্ত বলে ধরছেন বিচারক? এই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।

এই পর্যবেক্ষণ ভয় ধরিয়েছে তালিকার বাইরে থাকা বিপুল সংখ্যক বাঙালি–সহ অসমের প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের। গত ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট অসমে নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়। সেখানে নাম ছিল ৩ কোটি ১১ লক্ষ মানুষের। প্রায় ১৯ লক্ষ অসমবাসী বাদ পড়েন। তার মধ্যে বাঙালি দু’লক্ষ। তালিকাটি নিয়ে বিস্তর জলঘোলা শুরু হয়।

উপযুক্ত প্রমাণপত্র থাকা সত্ত্বেও অনেকের নাম বাদ যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। আপত্তি তোলেন স্বয়ং হিমন্ত বিশ্বশর্মাও। তিনি তখন রাজ্যের মন্ত্রী। এমনকী, চলতি বছর মে মাসে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েও এই খসড়াকে চূড়ান্ত বলে মানতে চাননি হিমন্ত। তাঁর কথায়, তালিকা সংশোধনের কথা। অথচ তার চার মাসের মধ্যেই নতুন করে সেই বিতর্ক উস্কে দিল ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল।

জানা গিয়েছে, পাথারকান্দি থানার জামিরালা গ্রামের বিক্রম সিংহকে ডি ভোটার ঘোষণা করা হয়। বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে ২০১৭ সালে মামলাটি আসে করিমগঞ্জের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল ২-তে। গত ১০ সেপ্টেম্বর মামলার রায় ঘোষণা হয়। বিক্রম সিংহকে জন্মসূত্রে ভারতের নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করার পর ট্রাইব্যুনালের সদস্য শিশির দে বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যু করা এখনও বাকি। তবে ২০১৯ সালের আগস্টে প্রকাশিত এনআরসি যে চূড়ান্ত তাতে কোনও সন্দেহ নেই।’

গত বিধানসভা নির্বাচনে এনআরসি তাস খেলে পশ্চিমবঙ্গেও বাজিমাত করতে চেয়েছিল বিজেপি। সেই স্বপ্ন চুরমার হওয়ার পর থেকে এই ইস্যুতে মুখে কুলুপ মোদী–অমিত শাহের। বিজেপিও ইদানীং বিষয়টি নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য করছে না।