‘এ কোন সকাল এ তো রাতের চেয়েও অন্ধকার।’ এই লাইনটিই যেন আজ বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে ভারতের জন্য। কারণ একদিকে করোনার সংক্রমণ, অন্যদিকে বন্যা। লকডাউনের কারণে মানুষের রুজিরুটি মার খাচ্ছে, আর বন্যায় বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি জলের তলায় চলে গিয়ে নষ্ট হচ্ছে ফসল। অসমের পর এবার বন্যার কবলে পড়েছে বিহারও। গরীব মানুষের মধ্যে অসহায়তা ক্রমশ বাড়ছে।
জানা গিয়েছে, উত্তর বিহারে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। রাজ্যের এই প্রান্তে সব নদীই বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। তবে সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি বিহারের পরিচিত কোশী নদীর। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ১০টি জেলার সাড়ে চার লক্ষ মানুষ বন্যায় দুর্গত। তার মধ্যে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন ১৩ হাজার মানুষ। এখনও পর্যন্ত ১৬টি ত্রাণ শিবির তৈরি করা হয়েছে।
বন্যায় সব থেকে বেশি প্রভাব পড়েছে সিতামাড়ি, সেওহর, সুপৌল, কিষাণগঞ্জ, দ্বারভাঙা, মুজফ্ফরপুর, গোপালগঞ্জ, পূর্ব চম্পারন, পশ্চিম চম্পারণ এবং খাগাড়িয়ায়। এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যে বন্যায় কারও মৃত্যু হয়নি। এই মরশুমে বিহার–নেপালে অতিসক্রিয় বর্ষা। শুরু থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে সেখানে। বৃষ্টির দাপট আরও বেড়েছে। তাই কোশী বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এমনকী বুধি, গন্দক, কমলা বালন আর লাল বাকেয়া নদীও বিপদসীমার ওপরে রয়েছে। অসমে বন্যায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৯। পাশাপাশি বিপর্যয় ঘটেছে মেঘালয়তেও।
সূত্রের খবর, রাজ্যের ২৬টি জেলার বন্যা পরিস্থিতি বেশ খারাপ। তার মধ্যে বারপেটা, বোঙ্গাইগাঁও, ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া আর কোকরাঝাড়ের পরিস্থিতি বেশ খারাপ। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৬ লক্ষ ৩১ হাজার ৩১৩ জন বন্যায় দুর্গত হয়েছেন। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে এখনও পর্যন্ত ১২০টি বন্যজন্তুর মৃত্যু হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অসমের জন্য ৩৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তবে মেঘালয়েও বন্যায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই রাজ্যের পশ্চিম গারো হিল্স জেলায় কিছু সমতল অঞ্চল রয়েছে যেটা অসমের ধুবরি আর গোয়ালপাড়া জেলার সঙ্গে সংযুক্ত।