আবার আমেরিকায় রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে করোনা। দৈনিক সংক্রমণ ছাড়িয়েছে ১ লক্ষের গণ্ডি। যেখানে জুনের শেষেও সংক্রমণের হার ছিল ১১ হাজারের আশপাশে, সেখানে গত ২৪ ঘণ্টার হিসেব ১ লক্ষ ৭ হাজার ১৪৩। মাত্র কয়েক সপ্তাহেই রাতারাতি বদলে গিয়েছে ছবিটা। মূলত ডেল্টা স্ট্রেনের দাপটেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। অথচ টিকাকরণের ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে আমেরিকা। সেদেশে ৭০ শতাংশ টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তারপরও সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে বাড়ছে আতঙ্ক।
‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ সূত্রে খবর, আগস্ট মাসের শুরুতেই একলাফে সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে। ১ আগস্ট আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৩ হাজার ১৩৯। পরের দিনই তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৩৬ হাজারেরও বেশি। তারপর থেকে আর দৈনিক সংক্রমণ ১ লক্ষের নিচে নামেনি। নিঃসন্দেহে এই পরিসংখ্যানে চিন্তার ভাঁজ বাইডেন প্রশাসনের কপালে।
কিন্তু এতজন টিকা নেওয়ার পরেও কেন সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতি? এক মার্কিন স্বাস্থ্য আধিকারিকের মতে, যদি বাকি মার্কিন নাগরিকরা টিকা না নেন, তাহলে এই সংক্রমণের গতি আরও বাড়বে। ‘সিএনএন’কে ‘সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’–এর ডিরেক্টর রোচেল ওয়ালেনস্কির কথায়, ‘আমাদের পর্যবেক্ষণ থেকে পরিষ্কার, যদি আমরা এতজনকে টিকা না দিয়ে রাখলে দৈনিক সংক্রমণ এর চেয়েও অনেক বেশি হত। ঠিক যেমন গত জানুয়ারিতে হয়েছিল।’
আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে ফ্লোরিডা, টেক্সাস, মিসৌরি, আরকানসাস, লুইজিয়ানা, আলাবামা ও মিসিসিপিতে। এর আগে জানানো হয়েছিল, দু’টি টিকার ডোজ যারা নিয়েছে তাদের আর মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে প্রশাসন।
আক্রান্তদের ক্ষেত্রে যাতে চিকিৎসা পেতে সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে সরকার। মিসৌরিতে ৩০টি অ্যাম্বুল্যান্স বরাদ্দ করা হয়েছে। তৈরি রাখা হয়েছে ৬০ জন মেডিক্যাল কর্মীদের। একই ব্যবস্থা রয়েছে অন্যান্য অঞ্চলেও। কোনওভাবেই যাতে সংক্রমণ ফের মাথাচাড়া না দিয়ে উঠতে পারে তা নিশ্চিত করতে সতর্ক রয়েছে বাইডেন প্রশাসন।