জট যেন আর কিছুতেই কাটছে না। আর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীও স্বস্তি পাচ্ছেন না। এবার পার্লামেন্টে ধাক্কা খেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তাঁর প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও প্রস্তাব পাশ করিয়ে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া বিলম্বিত করে দিলেন ব্রিটিশ সাংসদরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সবুজ সঙ্কেত পেয়ে যাওয়ার পরে আজ পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি পেশ করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের। ঠিক ছিল, সেই চুক্তি নিয়ে ভোট দেবেন ব্রিটিশ সাংসদরা। চুক্তি পাশ হয়ে গেলে ৩১ অক্টোবর ইইউ ছাড়তে ব্রিটেনের আর কোনও বাধা থাকবে না।
কিন্তু সব কী আর পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়! বরিসের সেই চুক্তি পেশের আগেই নাটকীয় মোড় নিল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। রবিবার দুপুরে তাঁর নিজের দল কনজ়ারভেটিভ পার্টির এক এমপি অলিভার লেটউইন ব্রেক্সিট পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব পেশ করেন। তাঁর যুক্তি ছিল, ৩১ অক্টোবর যাতে কোনওভাবেই চুক্তিহীন ব্রেক্সিট না হয় তা সুনিশ্চিত করতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বরিসের চুক্তি নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা করা দরকার। যা মাত্র ১১ দিনে সম্ভব নাও হতে পারে। বরিস বহুবার বলেছেন, ৩১ অক্টোবর যে কোনও মূল্যে ইইউ ছাড়বে ব্রিটেন। চুক্তি হোক, চাই নাই হোক। বরিসের সেই রাস্তা আটকাতেই ব্রেক্সিট ফের স্থগিত করার প্রস্তাব পেশ করেন লেটউইন।
আর ১৬ ভোটের ব্যবধানে সেই প্রস্তাব পাশও হয়ে যায়। লেটউইনের পক্ষে পড়ে ৩২২ ভোট। আর বিপক্ষে ৩০৬ ভোট। কনজারভেটিভদের বন্ধু দল এবং তাদের জোটসঙ্গী, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ডিইউপি’র সাংসদরাও ব্রেক্সিট পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেন। ৩২২–৩০৬ ভোটে পাশ হয়ে যায় প্রস্তাব। যার জেরে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ব্রিটিশ সরকারের তরফে প্রধানমন্ত্রীকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে অনুরোধ জানাতে হবে ব্রেক্সিটের সময়সীমা আরও কিছু দিন বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। সেক্ষেত্রে ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট হবে না।
যদিও বরিস এখনও নিজের অবস্থানে অনড়। তিনি সাফ জানান, এমন কোনও অনুরোধ জানাবেন না। শনিবারের ভোটাভুটি মঙ্গলবার করার কথাও বলেছেন তিনি। বরিসের প্রশ্ন, সময় বাড়ানোর দরকার কী? ব্রেক্সিট বিলটি পড়ে পাশ করিয়ে নিলেই তো হয়। পাল্টা বিরোধীদের দাবি, ভাল করে প্রস্তাব খতিয়ে না দেখে তাঁরা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চান না। আগে সমস্ত ধারা এবং সংশোধনী পাশ হবে, তারপর মূল সমঝোতা নিয়ে ভোটাভুটি হবে। তা হলে বরিসের প্রস্তাবিত চুক্তির কী হবে? প্রধানমন্ত্রী নিজেই জানান, আজ নয়, আগামী সপ্তাহে পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি পেশ করবেন তিনি। আজ একটা অর্থবহ ভোটাভুটির সুযোগ ছিল। কিন্তু আমরা সেই সুযোগ হারালাম।
