একসপ্তাহ পর মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের কিনারা করল পুলিশ। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিবাদ নিয়েই ওই নৃশংস খুন বলে জেরার মুখে স্বীকার করে নেয় ধৃত উৎপল বেহরা। পুলিশ সূত্রে খবর, দশমীর দিন দুপুর ১২টা ৬ মিনিট থেকে ১২টা ১১ মিনিট অর্থাৎ মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যেই তিনজনকে খুন করা হয়েছে। প্রাপ্য টাকা ফেরত না পেয়েই সপ্তমী থেকে খুনের ছক কষেছিল অভিযুক্ত উৎপল বেহরা। জেরায় খুনের কথা কবুল করেছে অভিযুক্ত উৎপল।
খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। জেরার মুখে ধৃত খুনের কথা কবুলও করেছে। প্রতিশোধস্পৃহা থেকেই নৃশংস খুন করা হয়েছিল পেশায় শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল–সহ তাঁর পরিবারের তিন জনকে। মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই কাজ হাসিল করেছিল সে। কিন্তু তদন্তে উঠে আসা তার বয়ান অনুযায়ী, একাধিক বিমা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মৃত বন্ধুপ্রকাশ পাল। উৎপলও তাঁকে বিমার টাকা দেয়। রশিদ চাইতেই জানা যায় জমাই পড়েনি সেই টাকা। মৃত শিক্ষকের কাছ থেকে ৪৮ হাজার টাকা পেত উৎপল। এরপর টাকার জন্য বন্ধুপ্রকাশকে চাপ দিলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় উৎপলকে বলে তার দাবি। টাকা না পেয়েই এই খুনের ছক করে সে।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, খুনের পর পোশাক বদলায় উৎপল। এরপর দুধওয়ালা বাড়িতে আসতেই তাঁকে ধাক্কা দিয়ে পালায় সে। বিছানায় মৃতদেহের পাশেই মিলেছে বিমার কাগজ। সেই কাগজেই লেখা ছিল উৎপল বেহরার নাম। সেই সূত্র মিলতেই পুলিশের জালে পড়ে উৎপল বেহরা এবং আটক করা হয় তার বোনকেও। খুনের দৃশ্য দেখে ফেলায় স্ত্রী এবং পুত্রকেও খুন করে উৎপল।
তদন্তে উঠে এসেছে, বন্ধুপ্রকাশের শেষ কথা হয়েছিল উৎপলের সঙ্গেই। এরপর খুন করে বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেয় সে। যদিও খুনের কথা অস্বীকার করেছে উৎপলের পরিবার। তার মায়ের দাবি তাদের ছেলে নির্দোষ। এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে পুলিশ।