স্বাস্থ্য

শিশুর হার্টের অসুখ

ছোট্ট সোনামণিরাও আক্রান্ত হতে পারে হার্টের অসুখে। শিশুদের হার্টের অসুখের এমন কিছু লক্ষণ আছে যা অনেক ক্ষেত্রেই নজর এড়িয়ে যায় বা অন্য কোনো সমস্যার উপসর্গ বলে মনে হয়। শিশুদের হার্টের অসুখ মূলত জন্মগত। কী করে বুঝবেন শিশুর হার্টের অসুখ আছে? কী করেই বা ওদের সুস্থ রাখবেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক –


লক্ষণ-
কনজেনিটাল হার্ট ডিজিজ

• সদ্য জন্মানো শিশু
কাঁদতে কাঁদতে নীল হয়ে যায়।
বুকের দুধ খেতে খেতে ক্লান্ত হয়ে যায়।
বুকের দুধ টেনে খেতে সমস্যা হয়।
কোলে থাকলে ভালো থাকে, বিছানায় শুইয়ে দিলে কষ্ট হয়।
খাওয়ার সময় কপাল, মাথার তালু ঘেমে যায়।
• ৩-৪ বছরের শিশু
হাঁটতে গেলে বা দৌড়ানোর সময় সহজেই হাঁপিয়ে যায়, বসে পড়ে। ঠোঁট, আঙুলের ডগা নীল হয়ে যায়।
শিশু ঠিকমতো বাড়ে না।
হঠাৎ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যায়।
বারবার ঠাণ্ডাজনিত অসুখে ভোগে, এমনকি এন্টিবায়োটিক দেওয়া বা হাসপাতালে নেওয়ার দরকারও পড়ে।

ব্লু বেবিজ
এই ধরণের হার্টের অসুখে শিশু খুব কান্না করে এবং হাঁটা বা দৌড়ানোর সময় নীল হয়ে যায়। শিশু অজ্ঞান হয়ে যায়, এমনকি মারাও যেতে পারে। তবে এই ধরণের হার্টের অসুখ খুব কম শিশুরই হয়ে থাকে।

কেন শিশুদের হার্টের অসুখ হয়?
কনজেনিটাল হার্ট ডিজিজ
জন্মগত হার্টের অসুখ জেনেটিক মিউটেশনের কারণে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটি সন্তানের এমন সমস্যা থাকলে, পরবর্তী সন্তানেরও এমন সমস্যার আশঙ্কা থাকে। মায়ের থেকে শিশুর এই অসুস্থতা পাওয়ার সম্ভাবনা তুলনামুলকভাবে কম।

অ্যাকোয়ার্ড হার্ট ডিজিজ
যেসব শিশুর পারিবারিকভাবে হার্টের অসুখের ইতিহাস রয়েছে, তাদের বংশগতভাবেই জন্মের পর হার্টের সুখ হওয়ার আশংকা থাকে।
শিশু যদি অলস হয়, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে শিশুদের
ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার এবং উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশংকা থাকে। যার ফলাফল হার্টের নানা ধরণের অসুখ।

চিকিৎসা-
শিশুদের হার্টের অসুখের চিকিৎসা মূলত দুই ধরণের। বেশিরভাগ সময়েই সার্জারি না করে চেষ্টা করা হয় অন্য উপায় অবলম্বন করার। ক্যাথিটার ইন্টারভেনশনের সাহায্যে হার্টের ফুটা, ভাল্বের সমস্যার চিকিৎসা করা হয়। কিছু জটিল সমস্যার ক্ষেত্রে সার্জারি করা হয়।

সতর্কতা-
শিশুর মধ্যে এই জাতীয় কোনো লক্ষণ দেখতে পেলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
ব্লু বেবিরা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাঁটু যতটা সম্ভব বুকের কাছে নিয়ে যান। এতে ওরা যে নীল হয়ে যায় তা আটকানো যাবে।
শিশুরা যাতে শারীরিক পরিশ্রম করে তা খেয়াল রাখুন। পড়াশোনা, কম্পিউটারের পাশাপাশি ওদের খেলাধুলার প্রতি নজর দিন।
পরিবারে কারও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে শিশুদের ব্যাপারে সতর্ক হন। তাদের খাবারে অতিরিক্ত নুন দেবেন না। চিপস, কিছু বিস্কুট, নুডুলসের মশলায় নুনের পরিমাণ বেশি থাকে। কাজেই এগুলো এড়িয়ে চলুন।
যে কোনো ফাস্ট ফুড এড়িয়ে যান।
শিশুদের খাবারে ফল এবং শাক-সবজির পরিমাণ বাড়ান।