লিড নিউজ

শাসক–বিরোধী বিধায়কদের হাতাহাতি!‌

বিধানসভায় হাতাহাতির দৃশ্য বিরল। আর সেটাই দেখা গেল শুক্রবার দুপুরের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। কাটমানি নিয়ে চাকরিতে নিয়োগ করা হচ্ছে। বিধায়ক প্রতিমা রজকের প্রশ্নে তুলকালাম বাধল বিধানসভায়। পরিস্থিতি সামলাতে শেষমেশ ওয়েলে নেমে আসেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত শান্ত হন বিধায়করা। পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দিকে তেড়ে গেলেন কংগ্রেস বিধায়ক কমলেশ চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভার ইতিহাসে প্রথমবার ওয়েলে নেমে হাতাহাতি রুখলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
ঠিক কী ঘটেছিল?‌ প্রশ্নোত্তর পর্বে মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজক পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে তাঁর দপ্তরে চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি শুভেন্দুকে প্রশ্ন করেন, ‘বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছে, পরিবহণ দপ্তরে ৩–৪ লাখ টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। এটা কি সত্যি?’‌ এই প্রশ্ন শুনেই নিজের আসনের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি প্রতিমা রজকের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এরকম কোনও অভিযোগ থাকলে আপনি প্রমাণ করুন। যদি না করতে পারেন তা হলে এখানেই ক্ষমা চান।’‌ এরপরই বিধানসভায় কংগ্রেসের বেঞ্চের দিকে উদ্দেশ্য করে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ‘‌পরেরবার আর জিততে পারবেন না। সাফ হয়ে যাবেন। মুর্শিদাবাদ ফাঁকা করে দেব।’‌ বিধানসভায় পরিবহন মন্ত্রীর এই হুঙ্কারের পরই ঝামেলা আরও চরমে ওঠে।
কমলেশ এরপর হুমায়ুন কবীরকে টপকে বেরিয়ে আসেন এবং মন্ত্রীর দিকে ছুটে যান। তাঁকে ছুটতে দেখে নিজের জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে আসেন শাসক দলের বিধায়করা। কমলেশের সঙ্গী হন অন্য কংগ্রেস বিধায়করা যোগ দেন বাম বিধায়করাও। রীতিমতো হাতাহাতির উপক্রম হয়। ধাক্কা লেগে পড়ে যান সুতির কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এরপরই তৃণমূল বিধায়ক অমল আচার্যের সঙ্গে হাতাহাতি বেঁধে যায় কংগ্রেস বিধায়ক কমলেশের। ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তখন বিধানসভার অন্দরে। এই পরিস্থিতিতে ওয়েলে নেমে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওয়েলে নেমে পরিস্থিতি সামাল দেন তিনি। বিধানসভার ইতিহাসে প্রথমবার ঝামেলা সামলাতে ওয়েলে নামতে হল মুখ্যমন্ত্রীকে। দলীয় বিধায়কদের শান্ত থাকার পরামর্শ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাধ্য হয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিধানসভার অন্দরে এই অবস্থা কাম্য নয়। আমি আব্দুল মান্নান এবং সুজনবাবুকে বলব, একজন বিধায়ক এরকম আর একজনের দিকে মারতে উঠে আসছে এটা উচিত নয়। আপনারা দেখুন। মন্ত্রীকে বলব, উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সংযত হন। আপনি ক্ষমা চাওয়ার যে কথা বলেছেন সেটা আমি রেকর্ড রাখছি না।’‌