রাজ্যসভায় তুমুল বিতর্কের মধ্যে সাংসদ হিসাবে শপথ নিলেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপিত রঞ্জন গগৈ। তবে তিনি শপথ নেওয়ার সময় প্রবল হট্টগোল করে বিরোধীরা। শপথের পরেই কংগ্রেসের নেতৃত্বে রাজ্যসভা থেকে ওয়াকআউট করে একাধিক বিরোধী দল। তাঁকে মনোনীত করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বৃহস্পতিবার রঞ্জন গগৈয়ের শপথের সময় ‘সেম সেম’ স্লোগানে বিক্ষোভ দেখান বিরোধী সাংসদরা।
২০১৯ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেন রঞ্জন গগৈ। তার ঠিক চার মাসের মাথায় হত ১৬ মার্চ তাঁর নাম রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে মনোনীত করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। কিছুদিন আগে গগৈ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে শপথ নিতে দিন৷ শপথগ্রহণের পরেই বলব, সব কথা৷ কেন এই প্রস্তাব স্বীকার করেছি, বলব সে কথাও।’
এদিকে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু জানান, আপনাদের ভিন্ন মত থাকতেই পারে। তা সংসদের বাইরে প্রকাশ করুন। তাঁর মনোনয়ন করছেন খোদ রাষ্ট্রপতি। এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানো সংসদের কর্তব্য। গগৈয়ের কথায়, দেশের বিচারব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গি সংসদে তুলে ধরার সুযোগ মিলবে আমার উপস্থিতিতে। পারস্পারিক সহাবস্থানে কাজ করবে আইন এবং বিচার স্তম্ভ। রঞ্জন গগৈকে রাজ্যসভায় স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি পাঠ করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জগৎ থেকে স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বরা রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন। প্রধান বিচারপতিরাও হয়েছেন। রঞ্জন গগৈ দেশের জন্য নিজের সাধ্যমতো অবদান রাখবেন, সে ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’
কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানান, সংবিধানে বিচারব্যবস্থা এবং আইন ব্যবস্থা স্বতন্ত্র ক্ষমতা রয়েছে। বিচারব্যবস্থার উপর বিশ্বাস এবং আস্থা জড়িয়ে। কিন্তু দুই স্তম্ভ একই বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে। গগৈয়ের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফও। এই বিষয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী মার্কেন্ডে কাটজু বলেন, ‘আমি ২০ বছর আইনজীবী ছিলাম। আরও ২০ বছর বিচারপতি ছিলাম। কিন্তু ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় এমন কোনও বিচারপতিকে চিনি না, যিনি রঞ্জন গগৈয়ের মতো নির্লজ্জ, আত্মসম্মানহীন এবং বিকৃত যৌনতার অধিকারী। সব ধরণের কুঅভ্যাস তাঁর আছে। আর এই অপদার্থ এখন সংসদে যাচ্ছেন।’