লাইফস্টাইল

মন থেকে বলুন ‘Sorry’

খুব ছোট একটি শব্দ ‘সরি’। অথচ এই ছোট শব্দটিই তৈরি করতে পারে ম্যাজিক। মুহূর্তে মিটিয়ে ফেলতে পারে সব মান-অভিমান, ভুল বোঝাবুঝি। কিন্তু মন থেকে এই ছোট্ট শব্দটি আমরা কতবার উচ্চারণ করি? মাঝে মাঝেই কি দ্বিধা-দ্বন্দ্ব অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় সরি বলার ক্ষেত্রে?
এমন অনেক ঘটনাই আমাদের জীবনে ঘটে যার জন্য আমরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী হয়ে থাকি। আর তার জন্য আমাদের ভেতরে কাজ করতে থাকে অপরাধবোধ। এই অপরাধবোধ থেকেই আমরা সরি বলে থাকি। রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে কারো গায়ে ধাক্কা লেগে গেলে আমরা বলি ‘সরি’। কিংবা কখনো যদি কারো কোনো কথার মধ্যে আমাদের অনিচ্ছাকৃত অনুপ্রবেশ ঘটে- সেখানেও আমরা সরি বলি। কিন্তু এই যে আমরা কথায় কথায় এমন ‘সরি’ বলি, তার কতটা মন থেকে বলি? রাস্তায় চলতে ফিরতে অথবা দৈনন্দিন কাজে কোনো ভুলত্রুটি হলেই আমরা সহজে সরি বলে ফেলতে পারি। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝি মেটানোর জন্য যদি সরি বলতে হয়, সেক্ষেত্রেই হাজারো দ্বিধা, ইগো অন্তরায় সৃষ্টি করে।
ধরুন, প্রিয় মানুষটির সঙ্গে মান-অভিমান চলছে। কিন্তু কেউ ‘সরি’ বলে উঠতে পারছেন না। আপনি হয়তো বুঝতে পারছেন দোষটা আপনারই, তারপরও নিজের ইগোর কাছে পরাজিত হয়ে পারছেন না সঙ্গীকে ‘সরি’ বলতে। এই অকারণ জেদ আর ইগোর জন্যই নষ্ট হয়ে যায় অনেক সম্পর্ক। অনেক সময় এমন হয়, আপনি নিজ থেকে ‘সরি’ বললে যিনি দোষ করেছেন তার ভেতরও তৈরি হয় অপরাধবোধ। আপনার বলা ‘সরি’ সাহায্য করে তাকে তার নিজের ভুল স্বীকার করতে। কিন্তু শুধু ‘সরি’ বললেই হয় না, বলার মধ্যে থাকতে হবে আপনার ভেতরকার আবেগ। দায়সারাভাবে নিজের দোষ স্বীকার করা বা ‘সরি’ বলা মানেই আপনি যার কাছে ‘সরি’ বলছেন পরোক্ষভাবে তাকে অপমান করছেন। সত্যিই যদি আপনার কোনো ভুল হয়ে থাকে, তার জন্য সেটা স্বীকার করে ‘সরি’ বলার মধ্যে যেন আপনার দৃঢ়তা থাকে। মুখে না বলেও প্রিয়জনকে বোঝাতে পারেন আপনি যে ‘সরি’- কীভাবে চলুন দেখে নেওয়া যাক।

বেছে নিতে পারেন ফুল
মন ভালো করতে ফুলের জুড়ি মেলা ভার। আর যেখানে জড়িয়ে আছে প্রিয়জনের অভিমান, সেখানে ফুলের বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না। তাই কাছের মানুষের সঙ্গে তৈরি হওয়া ব্যবধান মেটানোর জন্য তার পছন্দের এক গোছা ফুলকেই বেছে নিন ‘সরি’ বলার মাধ্যম হিসেবে।

সরি নোট
স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে? কিন্তু তার জেরে পাঁচদিন ধরে কথা বন্ধ। এতদিন ধরে ঝগড়া জিইয়ে রাখাটা ছেলেমানুষি হয়ে যাচ্ছে, তা দু’জনেই বুঝতে পারছেন। আপনিই এগিয়ে যান ঝগড়া মেটাতে। খাটের সাইড টেবিল, স্বামীর ওয়ালেট কিংবা অফিস ব্যাগের মধ্যে রেখে দিন একটা ছোট্ট সরি নোট কিংবা সুন্দর একটি সরি কার্ড। দেখবেন সব ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে দেবে আপনার এই ছোট্ট পদক্ষেপটি।

এসএমএস
শুধুমাত্র একটি এসএমএসের সাহায্যেই মিটিয়ে ফেলুন মান-অভিমান। প্রয়োজনে স্বীকার করে নিন যে সামনাসামনি সরি বলতে খানিকটা অস্বস্তি কাজ করছিল।

আচার-আচরণে
অনেক সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে আমরা আমাদের কাছের মানুষদের কষ্ট দিয়ে ফেলি। আপনার ছেলে বা মেয়েকে হয়তো সামান্য দুষ্টুমির জন্য কোনো কঠিন শাস্তি দিয়ে ফেলেছেন। এরপর থেকেই আপনার ভেতর অপরাধবোধ কাজ করতে শুরু করেছে। এমন অবস্থায় আপনার আচার-আচরণেই তাকে বুঝিয়ে দিন আপনি যে এজন্য দুঃখিত। ওর জন্য প্ল্যান করতে পারেন কোনো সারপ্রাইজের। বানিয়ে দিতে পারেন ওর পছন্দের কোনো খাবার। ওকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন ওর পছন্দের কোনো জায়গায়। দেখবেন ওরও মন ভালো হয়ে যাবে, আর আপনার ভেতরের অপরাধবোধও দূর হবে।