বর্ধমান স্টেশন ভবনের একাংশ ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। মৃতের পরিচয় জানা যায়নি। আহত আরও দু’জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। স্টেশনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত অন্য জায়গাগুলি লোহার বিম দিয়ে রাখা হয়েছে। তবে ট্রেন চলাচল বা যাত্রী পরিষেবা স্বাভাবিক বলে দাবি পূর্ব রেলের। রাত ২টো ৩৫ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয় বলে চিকিৎসকরা জানান। আহত হয়েছেন হপনা টুডু নামে এক ব্যক্তি। ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের তিনি বাসিন্দা।
সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন হাওড়ার ডিআরএম। স্টেশনের সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছিল বলে খবর। তখন কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, বহু প্রাচীন মূল ভবনটির পিলারগুলি ক্ষয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কেন সৌন্দর্যায়নের সময় সেদিকে নজর দেওয়া হয়নি, পুরো দুর্ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রেল। শনিবার রাত ৮.১৫ মিনিট নাগাদ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল ওই অংশটি। তখন স্টেশনে দূরপাল্লার যাত্রীদের ভিড় ছিল।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাত ১০টা নাগাদ স্টেশন চত্বরে আসেন জেলাশাসক বিজয় ভারতী। তিনি বলেন, ‘রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের ঘটনার কথা জানিয়েছি। ডিআরএম ও রেলের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার আসছেন। আমরা রেলের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছি।’ প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, বৃষ্টির জেরে এবং ট্রেন চলাচলের কম্পনের জেরে শতাব্দীপ্রাচীন স্টেশনের ওই কাঠামো ভেঙে পড়েছে। এই ঘটনার পর আরও কিছু জায়গা বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
এই দুর্ঘটনায় রেলকে সরাসরি কাঠগড়ায় তুললেন অধীর চৌধুরী। প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রীর দাবি, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই ঘটনা ঘটেছে। রক্ষণাবেক্ষণের কাজে বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে। পরিষেবা দেওয়ার সমস্ত কাজে বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। লোকসানে চলছে রেল। বেসরকারিকরণের কথা ভাবা হচ্ছে। ১০০ টাকা আয় করতে ১৪০ টাকা খরচ হচ্ছে রেলকে।
অন্যদিকে অল্পের জন্য আরও এক বড় বিপদ থেকে বাঁচল বর্ধমান। এক যুবকের তত্পরতাতেই আটকেছে ট্রেন দুর্ঘটনা। বর্ধমানে স্টেশন বিপর্যয়ের পর আবারও বিপদের মুখে পড়তে বসেছিলেন ট্রেন যাত্রীরা। তবে বরাত জোরেই বাঁচল প্রাণ। পাল্লা রোড স্টেশন থেকে ২০০ মিটার দূরে রেললাইনে ফাটল নজরে আসে সুরজ ঘোষ নামে এক যুবকের। তখন আসার কথা ছিল বর্ধমান–হাওড়া কর্ড লাইন লোকাল। হাজার মানুষের নিশ্চিত বুঝে দৌড়ে চলেন স্টেশনের দিকে। একটু দূরেই দেখা মেলে রেলকর্মীর। তাঁদের কাছেই বিপদের কথা উগরে দেন সুরজ। দুই কর্মী ট্রেন থামানোর ব্যবস্থা করেন। বাঁচে যাত্রীরা।
