রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যতই দাবি করুন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে কাশ্মীর, বাস্তব চিত্র কিন্তু সেই সাক্ষ্য বহন করছে না। আতঙ্ক যে এখনও কাটেনি তারই প্রমাণ মিলল শুক্রবার। অগ্নিসংযোগ থেকে হুমকি পোস্টারের জেরে ফের বন্ধ হয়ে গেল উপত্যকার দোকানপাট। স্তব্ধ হল যান চলাচল। রাতারাতি বন্ধের চেহারা নিয়ে নিল ভূস্বর্গ কাশ্মীর। এমনকী সকাল থেকেই অলিখিত বন্ধের চেহারায় তৈরি হল নয়া আতঙ্ক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রাতের শ্রীনগরে চারটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয় একদল দুষ্কৃতী। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি ঠেলাগাড়ি এবং একটি ক্যাব। জোর হুমকি দেওয়া হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। তড়িঘড়ি এই কাজের সঙ্গে যুক্তদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে শ্রীনগরের ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট শাহিদ ইকবাল চৌধুরী। পরিস্থিতি যে ফের অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে তা বেশ টের পাওয়া যায়। তাই স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোনও ঘটনা ঘটলেই সঙ্গে সঙ্গে তা থানায় জানাতে। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
কেন ফের তপ্ত হয়ে উঠল ভূস্বর্গ? পুলিশ সূত্রে খবর, অগ্নিসংযোগের প্রতিটি ঘটনার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত। এই ঘটনায় যুক্তদের খুব শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে। যারা কাশ্মীরকে বন্ধ রাখতে চায় তাদের হতাশার কারণেই এমন ঘটনা ঘটছে। অন্য একটি সূত্রে পাওয়া খবর, গত ৫ আগস্ট ৩৭০ ধারা বিলোপ করা হয়েছিল। যার ফলে কাশ্মীরবাসীর একাংশ মনে করছেন, তাঁদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। যদিও স্থানীয় প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে দাবি করেছে, বিশেষ মর্যাদার তকমা প্রত্যাহারের পর থেকে অনেক বেশি অধিকার ভোগ করছে উপত্যকাবাসী।
সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি এনভি রামানা, আর সুভাষ রেড্ডি এবং বিআর গাভাইয়ের প্রশ্নের জবাবে জম্মু–কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত প্রশাসনের বক্তব্য তুলে ধরেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি বলেন, উপত্যকা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য, স্কুল–কলেজ, যোগাযোগ ব্যবস্থা–সহ জরুরী পরিষেবা স্বাভাবিকভাবে চলছে। এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যদি স্বাভাবিক ছন্দেই ফিরছে উপত্যকা তাহলে এমন ঘটনা ঘটল কেন? জঙ্গিরা কীভাবে হত্যা করছে সাধারণ মানুষকে? আর গৃহবন্দি কেন করে রাখা হয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের? এইসব প্রশ্নের অবশ্য উত্তর মেলেনি।