না ফেরার দেশে চলে গেলেন অভিনেতা তাপস পাল। তার মৃত্যুতে বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রিয় অভিনেতা ও সহকর্মীকে হারিয়ে টলিপাড়ার খ্যাতিমান তারকা ও নির্মাতারা সংবাদমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন। অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, রঞ্জিত মল্লিক, অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ও হরনাথ চক্রবর্তীসহ অনেকেই জানিয়েছেন শোকবার্তা।
‘উত্তরা’ ও ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ সিনেমায় প্রখ্যাত নির্মাতা বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তাপস। তাকে নিয়ে পরিচালক বলেন, তাপস পালের মত প্রতিভাধর অভিনেতা টালিগঞ্জে কার্যত ছিল না। রাজনৈতিক মতামতের বাইরে সকলে অভিনেতা তাপসের গুণমুগ্ধ। তার সমতুল্য অভিনেতা বর্তমান টালিগঞ্জে নেই।
অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী প্রিয় সহকর্মীর প্রয়াণে মর্মাহত। তিনি বলেন, এক ভাইকে হারালাম। পরপর ভাল অনেক সিনেমা করেছে ও। ‘দাদার কীর্তি’ ও ‘সাহেব’র মতো সিনেমাগুলো ভোলা যায় না। কিন্তু শেষের দিকে ও হারিয়ে গেল। রাজনৈতিক একটা বক্তব্যের জন্য আড়ালে চলে গেল। আজ তার মৃত্যুর সংবাদ পেলাম। কিন্তু দেহ চলে গেলেও ওর আত্মা থেকে যাবে। খুব খারাপ লাগছে আমার।
তাপসের সঙ্গে অনেক সিনেমায় পর্দা ভাগ করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক। তিনি বলেন, খবরটা শুনে খুব খারাপ লাগছে। আমরা অনেক সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছি। সবগুলোই দর্শক নন্দিত। এর মধ্যে ‘গুরুদক্ষিণা’র মতো সিনেমাও রয়েছে। খবরটা শুনে মন খারাপ হয়ে গেল। দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে কাজ করেছি তো। তার আত্মার শান্তি কামনা করি।
তাপসের মৃত্যুর খবরে অভিনেত্রী দেবশ্রী রায় কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, আমি ভাবতে পারছি না উনি নেই। অকালে চলে গেলেন। আমাদের পরিবারের সদস্যের মতো ছিলেন। আমরা একসঙ্গে কম সিনেমা করেছি? তাপস দা বাঙালি দর্শকের কাছে এমন একজন নায়ক যার ফুটপ্রিন্ট ততদিন থাকবে, যতদিন বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থাকবে।
পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তীর বন্ধু ছিলেন তাপস। তিনি বলেন, কখনও মনে হয়নি ও অভিনেতা, আমি পরিচালক। আমাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। আমাদের একসঙ্গে ওঠাবসা ছিল। ‘গুরুদক্ষিণা’ থেকে শুরু করে সংঘর্ষ, অনেক সিনেমা করেছি ওর সঙ্গে। সে নেই, আর ভাবতেই পারছি না।
১৯৫৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর হুগলির চন্দননগরে তাপস পালের জন্ম । ছোটবেলা থেকেই তার অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল। তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘দাদার কীর্তি’ সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে এই অভিনেতার। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর। প্রথম সিনেমাতেই তিনি বাজিমাৎ করেছিলেন। প্রথম সিনেমার ব্যবসায়িক সাফল্য তাকে রাতারাতি সুপারস্টার বানিয়ে দেয়।