লিড নিউজ

জনতার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে শপথ কেজরিওয়ালের, দেখল দুনিয়া

এত জোরে ইভিএমের বোতাম টিপুন যাতে শাহিনবাগে গিয়ে কারেন্ট লাগে ও তা উড়ে যায়। এই মন্তব্যটি ছিল দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তারপর দিল্লির নির্বাচনে কি ফলাফল হয়েছে তা সবারই জানা। কিন্তু রবিবার অরবিন্দ কেজরিওয়াল শপথ নেওয়ার পর এত জোরে ভারত মাতা কি জয় বললেন যা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন ভেদ করে বারাণসীতে গিয়ে পৌঁছল। বিজেপি’‌র নিজস্ব স্লোগান বলে দাবি করা ‘‌ভারত মাতা কি জয়’ কারও একার নয় বোঝাতেই এই চরম সোচ্চার বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
মাথার ওপর তখন প্রকট সূর্য। নীচে উপচে পড়া রামলীলা ময়দান। মেঘগর্জন করা জনতার আওয়াজ এটাই ছিল রবিবাসরীয় দুপুরের ছবি। কেজরিওয়ালের পর উপমুখ্যমন্ত্রী পদে ফের শপথ নিলেন মণীশ শিসোদিয়া। তাঁদের পর সত্যেন্দ্র জৈন, গোপাল রাই, কৈলাস গেহলট, ইমরান হুসেন, রাজেন্দ্রনাথ গৌতম মন্ত্রী পদে শপথ নেন। এদিন তৃতীয় আপ মন্ত্রিসভার মোট ছয় মন্ত্রী শপথ নেন। আপ নেতা, কর্মী, এবং সমর্থক, আমজনতা ছাড়াও এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চে ছিলেন আইআইটি–র এক ছাত্র, নজফগড়ের এক শিক্ষক, দিল্লির বাসের এক মার্শাল। গোটা রামলীলা ময়দান তখন তাকিয়ে কেজরিওয়ালের দিকে।
শপথ নেওয়ার পর জনতার উদ্দেশ্যে কেজরিওয়াল বলেন, ‘কেউ আম আদমি পার্টি, কেউ বিজেপি, কেউ কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু ‌আমি সবার মুখ্যমন্ত্রী। সব দলের মুখ্যমন্ত্রী। সবাইকে গিয়ে বলবেন আপনাদের ঘরের ছেলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হয়েছে। আমি গত পাঁচ বছরে বিজেপি’‌র লোকদের জন্যও কাজ করেছি, আপের লোকদের জন্যও কাজ করেছি। ভোট শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমি এই পাঁচ বছরে সবার কাজ জন্যই করব। কারও কোনও সমস্যা হলেই আমার কাছে আসবেন। আমি প্রত্যেকের মুখ্যমন্ত্রী। সবার হয়েই কাজ করব। আমি একা দিল্লিকে উন্নত করতে পারব না। দিল্লির দু’‌কোটি মানুষ আর সব বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাহায্য চাই এই কাজ করার জন্য।’‌
আবার বড় হৃদয়ের পরিচয় দিয়ে দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‌ভোটের সময় অনেক কথা হয়। কিন্তু ভোট শেষ। বিরোধী দলগুলিকে বলছি সব ভুলে যান। আমরা সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছি। একসঙ্গে মিলে দিল্লিকে সুন্দর এবং উন্নত করার কাজ করব। আমি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেও মিলে কাজ করতে চাই। চিরাচরিত শার্ট, প্যান্ট আর অবশ্যই মাফলার। একেবারে চেনা অরবিন্দ জানিয়ে দিলেন, উন্নয়নই কেবল তাঁর রাজনীতির অংশ। তাই নির্বাচন জিততে বিজেপি নেতারা দেশদ্রোহী বা যে তীব্র ন্যক্কারজনক আক্রমণ শানিয়েছিলেন, সেইসব কিছু তিনি ভুলে গিয়েছেন। তখন লাখ জনতার ঢলে ছেয়ে গেল গোটা রামলীলা। শিশুরাও এল মাফলার ম্যান সেজে।