শনিবারও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলা। মুর্শিদাবাদের লালাগোলা ও কৃষ্ণপুর স্টেশনে তা চলে গিয়েছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কৃষ্ণপুর স্টেশনে ৪টি ট্রেনে আগুন লাগিয়েছে দুষ্কৃতীরা। কেন্দ্রের নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে মুখ খুললেন বাংলাদের বিদ্বজ্জনেরা। একইসঙ্গে বিক্ষোভের নামে হিংসাত্মক ঘটনারও নিন্দা করেছেন তাঁরা।
শনিবার লালগোলা স্টেশনে লাগানো হল আগুন। এরপর কৃষ্ণপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ৪টি ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দিল একদল বিক্ষোভকারী। দাউ দাউ করে জ্বলছে ট্রেনের একাধিক বগি। ক্রমশ তা ছড়িয়ে পড়ছে। সেই সময়ে ট্রেন পুরো ফাঁকা ছিল। বেলডাঙা স্টেশনে আগুন নেভাতে গেলে দমকলের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সুতিতে ফাঁকা অ্যাম্বুলেন্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
সকাল থেকেই ক্যাবের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখা যায় কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিক্ষোভকারীরা এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে যে ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর সাহস হচ্ছে না প্রশাসনের। হাসনাবাদেও চলছে বিক্ষোভ। বাতিল করা হয়েছে হাসনাবাদগামী ট্রেন। জাতীয় সড়ক কার্যত অচল করে দিয়ে চলে অবরোধ।
বিক্ষোভকারীদের হটাতে গেলে ইটের আঘাতে জখম হন হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (সাউথ)। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে সাঁকরাইল স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে। ভাঙচুর করা হয়েছে দোকানেও। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কন্ট্রোল প্যানেল। ফলে বাধার মুখে পড়ছে ট্রেন চলাচল। উলুবেড়িয়ায় হামসফর এক্সপ্রেসে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে খবর।
বিক্ষোভকারীদের হটাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ফাটানো হয় টিয়ার গ্যাসের শেলও। হাওড়ায় একাধিক বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি এবং হাসনাবাদ শাখায় ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধের জেরে আমডাঙায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। হাসনাবাদ শাখায় হাড়োয়া রোড, চম্পাপুকুর, সন্ডালিয়া, কাঁকরা, মির্জানগর, লেবুতলাতেও ট্রেন অবরোধ হয়।
অন্যদিকে শিয়ালদহ দক্ষিণে লক্ষ্মীকান্তপুর–নিশ্চিন্দাপুরের মাঝেও ট্রেন চলাচল কার্যত ব্যাহত করে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। রঘুনাথগঞ্জের একাধিক জায়গায় কয়েকঘণ্টা ধরে পথ অবরোধ চলছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেওয়া হয়। সাগরদিঘির পোড়াডাঙা, নিমতাতে চলছে রেল অবরোধ। বিক্ষোভের জেরে আটকে যায় মালদা–হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, নবদ্বীপধাম এক্সপ্রেস।