দেশ লিড নিউজ

ঘূর্ণিঝড় ‘‌ইয়াস’‌ মোকাবিলায় প্রস্তুত গোটা রাজ্য

ক্রমেই শক্তি বৃদ্ধি করছে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। বুধবার পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলায় আছড়ে পড়তে পারে একটি ঘূর্ণিঝড়। আমফানের স্মৃতি মাথায় রেখে কোমর বেঁধে প্রস্তুত প্রশাসনও। হাতে রয়েছে আর ক’টা দিন। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, রাজ্যের সমস্ত জেলা প্রশাসনের জন্য নির্দেশিকা জারি করল নবান্ন। আজ শুক্রবার বিকেলের দিকে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায়। সঙ্গে হতে পারে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতও। গাঙ্গেয় পশ্চিমের জেলাগুলিতে বিকেলের দিকে হতে পারে ঝড়–বৃষ্টি।
উপকূলবর্তী এলাকায় নজরদারি ও মাইকিং বাড়ানো হয়েছে। হলদিয়ায় ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর তৎপরতা তুঙ্গে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, শনিবারও বৃষ্টিপাত হতে পারে রাজ্যের একাধিক জেলায়। বাংলায় আছড়ে পড়তে পারে সাইক্লোন ইয়াস। আগামী ২৬ মে সকালে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে পৌঁছতে পারে। ওইদিন সন্ধ্যায় স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে ইয়াস। ২৫ মে থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি শুরু হবে। পরবর্তী সময়ে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। শুক্রবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল সর্বাধিক ৯০ শতাংশ।
নবান্নের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের সমস্ত ছুটি আপাতত বাতিল করা হচ্ছে। জেলা এবং ব্লক স্তরের কন্ট্রোল রুমকে ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় রাখতে হবে। আমফানের মতো পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য বৈঠক রয়েছে বিদ্যুৎভবনে। পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের পক্ষ থেকে সমস্ত পুরসভাগুলিকে তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে হলদিয়ায় অবস্থিত ইন্ডিয়ান কোস্ট গার্ডের কার্যালয় এবং কন্ট্রোল রুম থেকে মৎস্যজীবীদের উদ্দেশ্যে সতর্কতা প্রচার করা হচ্ছে। যাঁরা সমুদ্রে গিয়েছেন তাঁদের ২২ মের মধ্যে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর ডিআইজি সত্যরঞ্জন দাস জানান, ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় বাহিনী পুরোপুরি প্রস্তুত। বাহিনীর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে গঠন করা হয়েছে কুইক রেসপন্স টিম। প্রস্তুত ১৩টি জাহাজ, বোট এবং স্পিড বোট।
আতঙ্কে প্রহর গুনছে সুন্দরবন। একে কোভিডের আবহ, তার ওপর ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস–উৎকন্ঠার দিন গুনছে গোটা দক্ষিণ ২৪ পরগনা। আতঙ্কে দিন কাটছে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, হাড়োয়া–সহ একাধিক এলাকা। রাজ্যকে সতর্কবার্তায় কেন্দ্র জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। ‘ইয়াস’–এর সম্ভাব্য অভিমুখ বাংলা–ওড়িশা উপকূল। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে নবান্ন। গত বছরের আমফান অভিজ্ঞতার পর প্রশাসন কোনওরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ। ইয়াস মোকাবিলায় প্রস্তুত নবান্ন। ইতিমধ্যে নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েকটি দপ্তরের কর্মীদের ছুটিও বাতিল করা হয়েছে। সমুদ্রে যাওয়ার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।