দেশ লিড নিউজ

উপকূলে আছড়ে পড়ল ইয়াস, লণ্ডভণ্ড দিঘা

ঠিক যতটা শক্তি বাড়ানোর হুংকার দিচ্ছিল ‘ইয়াস’, ততটা শক্তি সে বাড়াল না। তার আগেই উপকূলে আছড়ে পড়ল সে। বুধবার সকাল সাড়ে নটায় উত্তর ধামড়ায় আছড়ে পড়ল ইয়াস। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলের তলায় রাজ্যের একাধিক এলাকা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এদিন সকাল ৯টা থেকে ঘূর্ণিঝড়ের আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী ২–৩ ঘণ্টা ধরেই এই প্রক্রিয়া চলছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গেভরা কোটালের ফলে রাজ্যে আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৫টি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে ৫১টি বাঁধ ভেঙেছে।
তবে ঝড় আসার আগেই উত্তর ওড়িশার উপকূল এবং পূর্ব মেদিনীপুর কার্যত লণ্ডভণ্ড। পূর্ব মেদিনীপুরের ঝড়ের সঙ্গেই প্রবল জলোচ্ছ্বাস চলছে। প্রশাসন রীতিমতো নাজেহাল। ‘ইয়াস’–এর প্রভাবে বৃষ্টি চলছে বাংলা, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড জুড়ে। দিঘার ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান করছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস।’ কিছুক্ষণের মধ্যেই উপকূলে আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া সেটা শুরু হয়ে যাবে। দুপুরের মধ্যেই সেই প্রক্রিয়াটি শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলকাতা, হাওড়া, হুগলিতে ঘণ্টায় ৭৫ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইবে। কোস্টাল এরিয়ায় ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিবেগ হতে পারে। লোল্যান্ড এলাকায় বন্যা হয়ে গিয়েছে। গোসাবার গ্রামে বিদ্যাধরী নদীর জল ঢুকে গিয়েছে। শংকরপুর, তাজপুর স্টেশন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বালেশ্বরের চাঁদিপুরের কাছে এই ঝড় উপকূল অতিক্রম করতে পারে। একটা স্বস্তির ব্যাপার হল উপকূলে আছড়ে পড়ার সময়ে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এটা ১৮৫ কিমি থাকবে বলে দাবি করা হচ্ছিল। ওড়িশায় ভদ্রক, বালেশ্বর, কেন্দ্রপড়া প্রভৃতি জেলায় ব্যাপক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ‘ইয়াস’–এর সব থেকে বেশি প্রভাব পড়ছে পূর্ব মেদিনীপুরে। দিঘা–মন্দারমণি–তাজপুর–সহ উপকূলবর্তী অঞ্চলে মঙ্গলবার রাত থেকেই প্রবল ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতিও হয়ে গিয়েছে সেই সব জায়গায়। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসও রয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ৩ লক্ষ ৮ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। ট্রাফিক সেফটির জন্য কলকাতায় ফ্লাইওভার বন্ধ করা হয়েছে। তবে পানীয় জল পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‌সবাইকে অনুরোধ করব, একটু কষ্ট করুন।’‌