জেলা

ইয়াস আগমনে ফুঁসছে সাগর

ঘূর্ণিঝড় ঠেকাতে আগাম সর্তকতা অবলম্বন করতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। এই বিষয়টি মাথায় রেখে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, কলকাতা পুরসভা, সিইএসসি, সেনাবাহিনীর আধিকারিকরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে বৈঠক। ইতিমধ্যেই দিঘায় দাপট দেখাতে শুরু করেছে এই ঝড় এবং বেশ কিছু জায়গায় মাঝারি থেকে ঘন বৃষ্টিও হয়েছে। বুধবার ইয়াসের গতিবেগ উত্তর বঙ্গোপসাগরে ১৯০ কিলোমিটার হতে পারে সতর্ক করেছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ডের দিকে ঝড়টির অভিমুখ রয়েছে। সেইজন্য পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব বর্ধমান— এই জেলাগুলিকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ওই জেলাগুলি থেকেও সাধারণ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। আমফানের শিক্ষা নিয়ে এবার আগে থাকতেই কোনও কসুর ছাড়তে রাজি নয় প্রশাসন। তাই জরুরি সতর্কতায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে মানুষজনকে। গঙ্গাসাগর, নামখানা–সহ সুন্দরবনের গোসাবা, ঘোড়ামারা এলাকাগুলি গত বছর আমফানের পরে ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।
মুখ্যসচিব জানান, সেনাবাহিনীও সঙ্গে থাকবে। দামোদর নদীর বাঁধগুলি থেকে বেশি জল ছাড়া হচ্ছে কি না, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে হুগলির জেলাশাসককে। সব থেকে খারাপ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্যুৎ চলে গেলেও যাতে তা দ্রুত ফিরিয়ে আনা যায়, তার জন্য কলকাতা পুরসভাকে নির্দেশ দেন। সিইএসসি’‌র সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে বলা হয়েছে কলকাতা পুরসভাকে। ঝড় চলে যাবার পর তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার নির্দেশও দেন তিনি।
এই সব এলাকার গ্রামগুলি থেকে মানুষদের নিয়ে আসা হচ্ছে ত্রাণ শিবিরের নিরাপদ আশ্রয়ে। আর তার দায়িত্ব পড়েছে সাগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হয়ে মন্ত্রিসভাতে জায়গা করে নেওয়া মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরার ওপর৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছেন ‘‌ইয়াস’‌ ঘূর্ণিঝড় থেকে সাগরের মানুষকে রক্ষা করার। ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় কেন্দ্র এবং ফ্লাড সেন্টারগুলি ছাড়াও এবার সুন্দরবনের প্রত্যেক মহকুমায় শতাধিক স্কুল এবং আইসিডিএস সেন্টারগুলিতে উপকূলের মানুষদের নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় চষে বেড়াচ্ছেন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। এই অগ্নিপরীক্ষায় পাশ করতেই হবে। এই কথা স্বীকার করে নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘‌ঝড়ের মোকাবিলা করতেই প্রশাসনের সাহায্যে সুন্দরবন জুড়ে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে রাখা হয়েছে। তবে করোনার ভয়ঙ্কর সংক্রমণের মাঝেই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা রীতিমত চ্যালেঞ্জ।’‌