জেলা

১১ মাস পর রাজ্যে খুলল হাইস্কুল

প্রায় ১১ মাস পর খুলল সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের দরজা। আজ ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে ফের অফলাইন ক্লাসে পড়ুয়ারা। এতদিন পর পুরনো পদ্ধতিতে ফিরতে পেরে খুশি প্রত্যেকে। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩৬ হাজার সরকারি ও সরকার পোষিত মাধ্যমিক স্কুল, প্রায় ১৪ হাজার উচ্চমাধ্যমিক স্কুল এবং ৬৩৬টি মাদ্রাসা রয়েছে। তার মধ্যে অধিকাংশই খুলে গেল। তবে করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল করতে একাধিক বিধিনিষেধ মানতে হচ্ছে।
এদিন সেই ব্ল্যাক বোর্ড, সেই চক ডাস্টারের গন্ধ, সেই চেয়ার টেবিল, লম্বা করিডোর, যেন অনেকদিন পর প্রাণ ফিরে পেল তারা। বামেদের ডাকা বনধকে তোয়াক্কা না করেই প্রথমদিন স্কুলে পৌঁছে গিয়েছে পড়ুয়ারা। স্কুলে পৌঁছনো নিয়ে অভিভাবকরা ইতস্ততবোধ করেছিলেন। তবে রাজ্য সরকার অতিরিক্ত সরকারি বাস নামিয়েছে রাস্তায়। এই বিষয়ে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, আমরা স্কুল পড়ুয়াদের আটকাচ্ছি না। করোনার জেরে পড়ুয়াদের যাতে ক্ষতি না হয় সেই কারণে অধিকাংশ স্কুলই শুরু করে অনলাইন ক্লাস। যা পড়ুয়াদের খানিকটা সাহায্য করলেও অধিকাংশের কাছেই অফলাইন ক্লাস বেশি প্রিয়। ফলে স্কুল কবে খুলবে সেদিকেই তাকিয়ে ছিল পড়ুয়ারা। আনলক পর্যায়ে স্কুল খোলা নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা চলে। কিন্তু কোভিড বিধি মেনে স্কুল পরিচালনা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছিল।
ক্লাসে ফিরছে রাজ্যের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় ৪০ লক্ষ পড়ুয়া। প্রায় ১১ মাস পর খোলে সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও অধিকাংশ বেসরকারি স্কুল। স্বাস্থ্য বিধি মেনেই স্কুল চলবে। স্কুলে ঢোকা থেকে বেরোনো মানতে হবে রাজ্য সরকারের জারি করা ২৮ পাতার গাইডলাইন। যার অন্যথা করা যাবে না বলে কড়া বার্তা প্রশাসনের। এবছর যারা মাধ্যমিক দেবে তাদের পরীক্ষা শেষে ক্লাস হয়েছে মাত্র আড়াই মাস, অন্য যারা উচ্চমাধ্যমিক দেবে তাদের কোনও ক্লাস হয়নি। নির্দেশিকায় বলা রয়েছে— স্কুল চলাকালীন শিক্ষক–শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষাকর্মী— সকলকেই মাস্ক পরতে হবে, স্যানিটাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি বজায় রাখতে হবে শারীরিক দূরত্ববিধি। প্রতিটি স্কুলে একটি পৃথক আইসোলেশন রুম রাখার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। কোনো পড়ুয়া অসুস্থ হলে বা তার মধ্যে করোনা সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিলে সেখানে রাখা হবে তাঁকে।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের ১২ তারিখ স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে কঠোরভাবে কোভিড বিধি মানতে হবে। ব্যবহার করতে হবে মাস্ক, স্যানিটাইজার। পালন করতে হবে দূরত্ব বিধি। প্রিয় বন্ধুর সঙ্গেও ভাগ করে খাওয়া যাবে না টিফিন। এত নিষেধাজ্ঞার মাঝেও স্কুলে যেতে পেরে খুশি পড়ুয়ারা। ছাত্রছাত্রীদের যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয়, সেদিকে নজর রেখেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।