জেলা

বিবেকানন্দের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ জামবনি

কলকাতায় রেড রোডে বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন জামবনির বিবেকানন্দ দাভে। খবরটা পাওয়ার পর থেকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে মৃত পুলিশকর্মীর পরিবারের সদস্যরা। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবার। তরতাজা ছেলেটির মৃত্যুর খবর পেয়ে একেবারে হতবাক প্রতিবেশীরাও। গ্রামের হাসিখুশি ছেলেটার ছবি সকলের চোখে যেন ভাসছে।

আশিস দাভে এবং মিনতি দাভের একমাত্র ছেলে বিবেকানন্দ। ১৫ বছর আগে কলকাতা পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। ছেলের সঙ্গে বাবা–মায়ের শেষ দেখা হয়েছে একমাস আগে। বিবেকানন্দ ঝাড়গ্রামে শ্বশুড়বাড়িতে থাকতেন। তাঁর স্ত্রী জামবনি ব্লকের বেলদা হাইস্কুলের শিক্ষিকা। তাঁদের আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে। তার লেখাপড়ার জন্য বিবেকানন্দ ঝাড়গ্রামে তার শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই কলকাতায় ছোটেন বিবেকানন্দের স্ত্রী।
কলকাতা ফোর্ট উইলিয়ামে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লকের চিচিড়া গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ। পুলিশ সূত্রে খবর, বিবেকানন্দ দাভে কলকাতা পুলিশ রিজার্ভ ফোর্সের কনস্টেবল। এদিন মোটরবাইক নিয়ে তিনি বেরিয়ে ছিলেন। ঠিক তখনই ঘাতক বাসটির সামনে পড়ে যান বিবেকানন্দ।

হাওড়া থেকে মেটিয়াবুরুজের দিকে যাচ্ছিল মিনি বাসটি। রেড রোডের উপর আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারায়। তখনই গাড়ির সামনে চলে আসে বিবেকানন্দ দাভের মোটরবাইক। মোটরবাইক সহ বাসের নিচে আটকে পড়েন তিনি। ফোর্ট উইলিয়ামের ইস্ট গেটের পাঁচিলে গিয়ে ধাক্কা মারে বাসটি। পাঁচিল ভেঙে বাসের কিছুটা অংশ সংরক্ষিত এলাকার ভিতরে ঢুকে যায়। সঙ্গে উপস্থিত জনতা ছুটে আসেন। বাসের মধ্যে বেশ কয়েকজন যাত্রী আটকে ছিলেন বলে শোনা গিয়েছে। স্থানীয়রাই প্রথমে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশকর্মীরা। ক্রেন দিয়ে বাসটি সরানো হয়।

বাসের নিচে আটকে থাকা সংজ্ঞাহীন অবস্থায় বিবেকানন্দ দাভেকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছু পরেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে খবর।
এই খবর গ্রামে পৌঁছতেই রীতিমত শোকের ছায়া নেমে আসে। খবরটা পাওয়ার পর থেকে বিবেকানন্দের জামবনির বাড়ি সামনে তিল ধারণের জায়গা নেই। বাড়ির এক মাত্র রোজগেরে ছেলেকে অকালে হারিয়েছে দাভে পরিবার। গোটা গ্রাম ভেঙে এসেছে এই কঠিন সময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে।