জেলা

পুলিশের দ্বারস্থ বিশ্বভারতীর উপাচার্য

তিন পড়ুয়ার বহিষ্কারের প্রতিবাদে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন তীব্র হচ্ছে। পড়ুয়াদের আন্দোলন পঞ্চম দিনে পড়ল। নিরাপত্তার অভাববোধ করায় এদিনই রাজ্য সরকারের পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এদিন সকালে সেন্ট্রাল অফিসে ঢোকার আগে বলাকার ফটক বন্ধ দেখতে পান কর্মীরা। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও ভিতরে ঢুকতে পারেননি তাঁরা।

এদিনই বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সভাপতি ঐশী ঘোষ। বোলপুর শান্তিনিকেতন স্টেশন থেকে প্রতিবাদ মিছিল করে এসএফআই। মিছিল শেষে শান্তিনিকেতনের বলাকা ফটকের সামনে অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ প্রতিবাদীরা।

ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের জেরে পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চাইলেন উপাচার্য। সূত্রের খবর, তাঁর বাসভবন পূর্বিতার সামনে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও নিরাপত্তা চেয়ে শান্তিনিকেতন থানায় ই-মেলে আবেদন করেছেন তিনি। সত্যতা স্বীকার করেছেন জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী। তিনি বলেন, ‘‌উপাচার্য আমাদের কাছে নিরাপত্তার আবেদন করেছেন।’‌

শান্তিনিকেতনের সেন্ট্রাল অফিসে কাজে যোগ দিতে গিয়ে ঢুকতে পারেননি শ’খানেক কর্মী। তাঁরা বলাকা গেটের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, আন্দোলনরত পড়ুয়ারা তালা মেরে বিশ্বভারতীর কর্মসংস্কৃতি নষ্ট করতে চাইছে। তবে কর্তৃপক্ষের এই দাবি না মেনে বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা গেটে প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে জানিয়ে দেন, উপাচার্যের নির্দেশে নিরাপত্তাকর্মীরাই তালা মেরেছে।

উপাচার্যের বাসভবন পূর্বিতার সামনে প্রতিবাদী মঞ্চে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেন এসএফআইয়ের নেতা–নেত্রীরা। তাঁরা পড়ুয়াদের অভিযোগ শোনেন। সাংবাদিকদের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। সৃজন চক্রবর্তী, ঐশী ঘোষরা বলেন, ‘‌এই আন্দোলনকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কিছু বাড়তি দায়িত্ব থাকে। ছাত্র, কর্মী, শিক্ষক, স্থানীয় ব্যবসায়ী সহ সকলকে নিয়ে চলাই কর্তব্য উপাচার্যের। তা না করে তিনি আরএসএস ও বিজেপির বিভিন্ন অ্যাজেন্ডাকে বিশ্বভারতীতে চাপানোর চেষ্টা করছেন।’‌

এদিন দুপুরে এসএফআইয়ের নেতৃত্বে বোলপুর শান্তিনিকেতন স্টেশন এলাকা থেকে একটি প্রতিবাদী মিছিল বের করা হয়। ঐশী, সৃজন ছাড়াও বাদশা মৈত্র সহ বিশ্বভারতীর বেশকিছু প্রাক্তনী ও হাজারখানেক সমর্থক যোগ দেন। মিছিলটি শেষ হয় শান্তিনিকেতনের বলাকা ফটকের সামনে। এরপর উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে ও পড়ুয়াদের বহিষ্কারের প্রতিবাদে শান্তিনিকেতন রোড অবরোধ করে এসএফআই সর্মথকরা।