জেলা

পূর্ণমান ১০০, প্রাপ্তি ২০০!‌

মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা। তাতে কেউ পেয়েছেন ২০০, কেউ বা ১৯৮, আবার কেউ ১৫১। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএড প্রবেশিকার মেধা তালিকা দেখে চক্ষু চড়কগাছ পড়ুয়া থেকে অধ্যাপকদের। সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্বভারতীর নিজস্ব ওয়েবসাইটে তা প্রকাশিত হয়। তারপরই পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়ায় চরম বিভ্রান্তি। এ কেমন মূল্যায়ন? কোন পদ্ধতি মেনে তা করা হয়েছে? উঠছে প্রশ্ন।

আর বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, পরীক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই মেধা তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তবে কি সেই তথ্য যাচাই না করেই তুলে দেওয়া হয়েছে ওয়েবসাইটে? এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। যদিও খবর জানাজানি হতেই মঙ্গলবার রাতেই ওয়েবসাইট থেকে মেধা তালিকা সরিয়ে নেওয়া হয়।

এমএড কোর্সে মোট আসন ৫০টি। তার মধ্যে ২৫টি আসন বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত। গত ১৪ সেপ্টেম্বর অনলাইনে নেওয়া হয়েছিল প্রবেশিকা। বিশ্বভারতী ছাড়াও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা সেই পরীক্ষায় বসেছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী, পূর্ণমান ১০০ মধ্যে ৬০ নম্বর লিখিত পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ। বাকি ৪০ নম্বর আগের পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। প্রকাশিত মেধা তালিকার ভিত্তিতেই ভর্তির সুযোগ পান পরীক্ষার্থীরা। আর সেই তালিকায় দেখা যাচ্ছে, ভাষা বিভাগে দুই পড়ুয়া ১০০-র মধ্যে পেয়েছেন যথাক্রমে ২০০.২৮ ও ১৯৮, ৩৮৫। আবার সমাজবিজ্ঞান বিভাগে দুই পড়ুয়ার প্রাপ্ত নম্বর যথাক্রমে ১৯৬.৩৬৭ ও ১৫১.২৭৫। কীভাবে এটা সম্ভব?

বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, এমএড-এ ভর্তির জন্য এতদিন যে অ্যাডমিশন কমিটি ছিল, এই বছর তাতে রদবদল করা হয়েছে। তার জেরেই এই বিপত্তি। অনলাইনে পরীক্ষার পর পরীক্ষার্থীদের মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক স্তরের মূল্যায়নের শংসাপত্র পোর্টালে আপলোড করা বাধ্যতামূলক। সেগুলি ঠিকমতো যাচাই করা হয়নি বলেই মেধা তালিকায় এই গরমিল। যদিও এক আধিকারিকের দাবি, পরীক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্য ও নম্বরের ভিত্তিতেই পোর্টালে নম্বর তোলা হয়েছে।

অবিলম্বে সঠিক ও স্বচ্ছ মেধা তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা। তাঁদের বক্তব্য, সমস্যা যদি পোর্টালের হয়, তাহলে অন্য বিভাগের মেধা তালিকাতেও তা ধরা পড়ত। কিন্তু এমএড-এর মেধা তালিকায় যেভাবে নম্বর বসানো হয়েছে, তাতে স্বজনপোষণের আশঙ্কা যথেষ্ট। একের পর এক বিতর্কের মধ্যে রবীন্দ্র-ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়টির ভাবমূর্তি আরও একবার ক্ষুণ্ণ হল। আমরা এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।