সাত সকালে ইউনিফর্ম ছাড়াই বহরমপুর বাজার করতে গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তন্ময় সরকার। ঘুরে ঘুরে বাজার করছিলেন বাড়ির কর্তাদের মতোই। তখন তাঁর সঙ্গে রক্ষীরাও ছিলেন না। ফলে তাঁকে চিনতেই পারেননি বাজারের সবজিওয়ালা বা দোকানিদের কেউই।
ওই বাজারে ঠেলায় করে এক পেয়ারা বিক্রেতা তন্ময়বাবুর কাছে আবদার করে বসেন তাঁর দোকান কিছু সময় পাহারা দেওয়ার জন্য। কার্যত না চিনেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে ওই পেয়ারা বিক্রেতা বলে বসেন, “দাদা, আমার ভ্যানটি একটু দেখবেন। আমি খেয়ে আসি”। আর কোনও রকম রাগ না দেখিয়ে পুলিশ কর্তা তাঁকে খেতে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দেন। এরপর প্রায় মিনিট ২০ নির্দ্বিধায় তিনি পেয়ার ভ্যানটি পাহারা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, খরিদ্দার এলে তাঁদের দাঁড়িপাল্লায় পেয়ারা মেপে পেয়ারা বিক্রিও করেছেন। ক্রেতাদের মধ্যে অনেকেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ASP, Murshidabad) তন্ময় সরকারকে চিনতেও পারেন। তাঁদের মধ্যেই কেউ নতুন পেয়ারা বিক্রেতার ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দেন। মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
মিনিট ২০ পর ওই পেয়ারা বিক্রেতা ফিরে এলে তন্ময়বাবু তাঁকে বিক্রির হিসেব ও পাওনাগন্ডা বুঝিয়ে নিজের বাজারের থলি হাতে বাড়ি ফিরে যান। পরবর্তী সময়ে তিনি জানতে পারেন তাঁর পেয়ারা বিক্রির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। আর সব ঘটনা জানার পর ওই পেয়ারা বিক্রেতার প্রতিক্রিয়া, “আমি প্রতিদিন এই এলাকায় পেয়ারা বিক্রি করি। শনিবার সকালেও দোকান খুলে বসেছিলাম। আমি না চিনেই ওই বাবুকে পেয়ারার ভ্যানটি দেখতে অনুরোধ করি। আমি তখন জানতাম না উনি এতবড় একজন পুলিশ অফিসার। তবে উনি যে না রেগে আমার দাবি মেনে নেবেন, সেটা ভাবতেই পারিনি। তবে আমি খুশি উনি এ ভাবে আমার ভ্যান থেকে পেয়ারা বিক্রি করায়”। খুশি বাজারের অন্যান্য দোকানিরাও। আর তন্ময়বাবুর ভাবলেশহীন প্রতিক্রিয়া, মাঝেমধ্যেই এ ভাবে পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াই। সেদিনও একটু বাজারে গিয়েছিলাম। ওই বিক্রেতার অনুরোধে আমি তাঁর দোকান কিছু সময় সামলে দিয়েছি। বুঝিনি আমার ছবি এভাবে ভাইরাল হবে”।
You must be logged in to post a comment.