আফগানি মহিলাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়াও আটকে দিল তালিবান। আলাদাভাবে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা, হিজাব-নিকাবের নিয়ম এনেও স্বস্তি পায়নি আফগানিস্তানের নয়া সরকার। এবার কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জানিয়ে দিলেন, আসল ইসলামিক পরিবেশ গঠন না হওয়া পর্যন্ত মহিলা পড়ুয়ারা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসেন।
এই সরকারের ঘোষণার পরই কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মহম্মদ ওসমান বাবুরিকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার বদলে নিয়োগ করা হয় মহম্মদ আসরাফ ঘাইরাতকে। এই ঘাইরাতকে ঘিরে একাধিক বিতর্ক থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসাবে তাঁকে নিয়োগ করাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা করা হয়।
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনের দায়িত্ব পাওয়ার পরই ঘাইরাত মহিলা পড়ুয়াদের আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে বারণ করে দিয়েছেন। ক্ষমতায় আসার পরই আফগানিস্তান জুড়ে মহিলারা অধিকার ও স্বাধীনতা খোয়ানোর আশঙ্কা করেছিলেন। কিন্তু তালিবানের তরফে আশ্বস্ত করে বলা হয়েছিল, শরিয়া আইন মেনেই আফগান মহিলাদের শিক্ষা ও কাজ করার অধিকার দেওয়া হবে। যদিও এই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বাস্তবের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। চিকিৎসাক্ষেত্রে কর্মীদের সঙ্কট দেখা দেওয়ায় মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজে ফিরতে অনুমতি দেওয়া হলেও বাকিদের বাড়িতে থাকতেই নির্দেশ দেওয়া হয়।
শিক্ষাক্ষেত্রেও তালিবানি ফতেয়া জারি করা হয়। নয়া সরকারের নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, মহিলারা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারলেও তারা ছাত্রদের সঙ্গে একই কক্ষে বসতে পারবেন না। স্বামী বা রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, এমন কোনও পুরুষ সঙ্গীর তত্বাবধানেই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন। যদি আলাদা ক্লাসরুমের ব্যবস্থা না করা যায়, তবে ১৫ জনের বেশি পড়ুয়া থাকলেও মাঝখানে পর্দা টাঙিয়ে দিতে হবে।
সাংস্কৃতিক কমিশনের ডেপুটি প্রধান আহমাদুল্লাহ ওয়াসিকও নয়া নির্দেশিকা ঘোষণা করে বলেন, “মহিলাদের খেলাধুলোর কোনও প্রয়োজন নেই। এতে শরীর প্রদর্শন হয়, যা আইন বিরুদ্ধ। তাই এতদিন ধরে আফগান মহিলারা ক্রিকেট সহ অন্যান্য যে ক্রীড়াগুলিতে অংশ নিতেন, সেগুলিতে আর অংশ নিতে পারবেন না।”