প্রয়াত হলেন কিংবদন্তি ফুটবলার চুনী গোস্বামী। দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর ছেলে সুদীপ্ত গোস্বামী এই খবর জানিয়েছেন। ভারতীয় ফুটবলে এটা আর একটা নক্ষত্রপতন। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় প্রয়াত হন প্রবাদপ্রতীম এই ফুটবলার। হাসপাতাল সূত্রে খবর, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন চুনী গোস্বামী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রীড়া জগৎ সহ সর্বস্তরে।
এই বছরই প্রয়াত হয়েছিলেন আর এক ফুটবলার পিকে ব্যানার্জি। আর তার কিছুদিনের মধ্যেই প্রয়াত হলেন তাঁর বন্ধু প্রবাদপ্রতিম ফুটবলার চুনী গোস্বামী। দীর্ঘদিন ধরেই বয়সজনিত কারণে ভুগছিলেন। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে যোধপুর পার্কের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন তিনি।
১৯৫৬ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয়েছিল চুনীর। ১৯৬২ সালের এশিয়ান গেমসে সোনাজয়ী ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। চুনী গোস্বামীর ফুটবলজীবন ছিল অজস্র কীর্তিতে উজ্জ্বল। তবে তার মধ্যেই এশিয়ান গেমসে সোনা জয় ছিল সেরা মুকুট। এক মাসের ব্যবধানেই চলে গেলেন ভারতীয় ফুটবলের আর এক কিংবদন্তি ফুটবলার। বৃহস্পতিবার বিকেলে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন সুবিমল গোস্বামী। এটাই ছিল তাঁর নাম। মাঠে–ময়দানে খেলার সুবাদে তাঁর নাম হয় চুনী। আর এই নামেই তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন আপামর বিশ্বের কাছে। ভারতীয় ফুটবলকে কাঁদিয়ে চির বিদায় নিলেন চুনী গোস্বামী।
বলা হয়, ‘মোহনবাগানের ঘরের ছেলে’ এই তকমা জুড়ে ছিল চুনীর নামের সঙ্গে। কারণ ২০০টা গোল করেছেন তিনি সবুজ–মেরুন জার্সিতে। মোহনবাগান থেকে জাতীয় দলে দাপটের সঙ্গে খেলেছেন সুবিমল গোস্বামী ওরফে চুনী। শুধু ফুটবল নয় খেলেছেন ক্রিকেটও। হয়েছেন কলকাতার শেরিফও। তিনি ছিলেন ভারতীয় ফুটবলের গ্ল্যামার বয়! তবে গ্ল্যামারের জন্য নয় মানুষ তাঁকে মনে রাখবেন তাঁর ড্রিবলিংয়ের জন্য এটাই চাইতেন চুনী গোস্বামী।
পরিবার সূত্রে খবর, গত কয়েকমাস ধরেই অসুস্থ ছিলেন অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাক্তন ফুটবলার। মূলত সুগার, প্রোস্টেট এবং স্নায়ু সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন চুনী গোস্বামী। ১৯৬২ সালে চুনী গোস্বামীর অধিনায়কত্বেই এশিয়ান গেমসে সোনা জিতেছিল ভারতীয় ফুটবল দল। স্ট্রাইকার হিসেবে ৫০টি আন্তর্জাতিক ফুটব্যাল ম্যাচ খেলেছিলেন চুনী। এছাড়াও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচও খেলেছেন। ঘরোয়া লিগে মোহনবাগানের হয়ে সবচেয়ে সফল তিনি। ১৯৬৩ সালে অর্জুন পুরস্কার, ১৯৮৩ সালে পদ্মশ্রী এবং ২০০৫ সালে মোহনবাগান রত্ন পুরস্কারে সম্মানিত হন চুনী গোস্বামী।
