দেশ ব্রেকিং নিউজ

উত্তরাখণ্ডে নিখোঁজ কমপক্ষে ১৫০

রবিবার উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় হিমবাহ ভেঙে অলকনন্দা ও ধৌলিগঙ্গা নদীর জলস্তর প্রবলভাবে বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। তার জেরে শতাধিক মানুষের ভেসে যাওয়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। খবর পাওয়ার পরই ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে পুলিশ পৌঁছয়। কিন্তু সেই ধস আরও ভয়াবহ আকার নেয়। হিমবাহ ভেঙে পড়ার পর প্রবল তোড়ে জল নেমে আসতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই ১০০ থেকে ১৫০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করছে প্রশাসন। ঋষিগঙ্গা পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পে ঘটনার সময় ১৫০ শ্রমিক কাজ করছিলেন। তাঁরা এখন নিখোঁজ। সংবাদসংস্থা এএনআই–কে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যসচিব ওম প্রকাশ জানান, এঁদের অনেকেই জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে থাকতে পারেন। তবে নিহত এবং আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, জোশীমঠের কাছে ওই তুষারধসের জেরে বাঁধ ভাঙা জলের তোড়ে একের পর এক গ্রাম ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আশেপাশের জনবসতি থেকে গ্রামবাসীদের জরুরি তৎপরতায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রেইনি গ্রামের কাছে বিদ্যুৎ প্রকল্পটি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এলাকায় গিয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলার দল এবং আইপিটিপির প্রায় শ’খানেক সদস্য। উদ্ধারকাজ চলছে দ্রুত গতিতে।
বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছিল বৃষ্টিপাত সঙ্গে তুষারপাত। তার জেরেই এই ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। ধসের জন্য ধৌলিগঙ্গার বাঁধে ভাঙন ধরেছে। জানা গিয়েছে, চামোলি হিমবাহে ফাটলের কারণে এই ধস। জোশীমঠের কাছে গ্রামের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা। ধুলিগঙ্গার পাশের গ্রাম খালি করা হচ্ছে। এই ঘটনায় রাহুল গান্ধী টুইট করে বলেন, ‘‌চামোলিতে হিমবাহ ভেঙে যাওয়ার কারণে বন্যার সম্ভাবনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমার সমবেদনা উত্তরাখণ্ডের জনগণের সঙ্গে রয়েছে। রাজ্য সরকারের উচিত সমস্ত ক্ষতিগ্রস্তকে তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রদান করা। কংগ্রেসের সহকর্মীরাও ত্রাণের কাজে হাত দিয়েছেন।’‌
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গ্রামগুলির কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে রেইনি গ্রামের কাছে অবস্থিত সেতুটি ভেসে গিয়েছে। ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মরত অনেক শ্রমিক কর্মচারীই জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছেন। প্রকল্পের কোনও চিহ্নই নেই ওই এলাকায়। মানচিত্র থেকে কার্যত মুছে গিয়েছে বিদ্যুৎ প্রকল্পটি। এখনও পর্যন্ত প্রায় দেড়শো জন নিখোঁজ। চামোলি থেকে ঋষিকেশ যাওয়ার রাস্তায় ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। হু হু করে জল বাড়তে থাকায়, অলকানন্দার জলের গতিপথ পরিবর্তন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানান, ‘‌উত্তরাখণ্ডের দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি অবিরত পর্যবেক্ষণ করছি। গোটা দেশ উত্তরাখণ্ডের পাশে আছে। সকলের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করছি।’‌ প্রকৃতির রোষে দেবভূমিতে প্রলয়, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্রা সিং রাওয়াতের সঙ্গে কথা বললেন অমিত শাহ। বিষ্ণুপ্রয়াগ, জোশীমঠ, কর্ণপ্রয়াগ, রুদ্রপ্রয়াগ, শ্রীনগর, ঋষিকেশ বা হরিদ্বার থেকে অলকানন্দা ও গঙ্গা নদীর তীর বরাবর সতর্কতা জারি করেছে উত্তরাখণ্ড রাজ্য সরকার।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত টুইট করে জানান, ‘‌চামোলি জেলা থেকে একটি বিপর্যয়ের খবর পাওয়া গিয়েছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ এবং বিপর্যয় ব্যবস্থাপনাকে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও ধরনের গুজবে কান দেবেন না। সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিচ্ছে।’‌ দুর্গতদের সাহায্যে হেল্পলাইন নম্বর খোলা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্রের ১০৭০ অথবা ৯৫৫৭৪৪৪৮৬ নম্বরে ফোন করলে সহযোগিতা পাওয়া যাবে।