আন্তর্জাতিক

চিনের পথ আটকে মার্কিন রণতরী

লাদাখে যুদ্ধ পরিস্থিতি। ওদিকে ভারত মহাসাগরে ড্রাগনের দমবন্ধ অবস্থা। পথ আটকে মার্কিন রণতরী। যে দক্ষিণ চিন সাগরের অধিকার নিয়ে তুমুল বিতর্ক, সেখানে সামরিক মহড়া শুরু করেছে বেজিং। আর তখনই ওই অবস্থায় চিনের উপর চাপ বাড়াতে দু’টি পরমাণু ক্ষমতাসম্পন্ন রণতরীকে সে পথে রওনা করিয়ে দিয়েছে আমেরিকা। যার মধ্যে রয়েছে ইউএসএস নিমিৎজ এবং ইউএসএস রোনাল্ড রেগন। আর তাতেই প্রবল স্নায়ুর চাপ বেড়েছে চিন এবং তার সেনাদের।
ভারত ও চিন। হিমালয়ের দুই পাশে হাজার হাজার বছরের প্রাচীন দুই সভ্যতা। একদিকে আর্যজাতি। অন্যদিকে আগ্রাসী হুনজাতি। পাঁচিল হয়ে এতদিন আর্যাবর্তকে রক্ষা করেছে হিমালয়। তবে হিমালয় আক্রান্ত হয় ১৯৬২ সালে। চিনের আগ্রাসী মনোভাব প্রমাণ করল, হিমালয়ও হতে পারে যুদ্ধক্ষেত্র। ১৯৬২ সালের পর থেকে ক্রমাগত লাদাখ দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চিন। পণ্ডিত নেহরুর কাছে যা ছিল নীরস ভূখণ্ড, চিন সেখানেই দেখেছে সামরিক সম্ভাবনা। লাদাখ দখলে কেন এত মরিয়া চিন? যার উত্তর লুকিয়ে রয়েছে দক্ষিণ চিন সাগরে।
রিয়ার অ্যাডমিরাল জর্জ এম উইকফ বলেন, ‘বন্ধু ও সহযোগীদের স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই—ভারসাম্য ও আঞ্চলিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখার ব্যাপারে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’‌ লেহ–র বিজেপি সভাপতি দোরজে আংচুকর বক্তব্য, ‘চিন আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে৷ দেশ যখন করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তখন চিনের সেনা আমাদের সীমা দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছে৷ এটা একেবারেই অনৈতিক কাজ, জবাব ওদেরকে পেতেই হবে৷’ ভারতের পশ্চিম দিকে শ্রীলঙ্কার নীচ দিয়ে আন্দামান নিকোবর পেরিয়ে মালয়েশিয়া আর ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ চিন সাগর হয়ে উত্তর পূর্ব দিকে সাংহাই। এই হচ্ছে আরব থেকে চিনে পেট্রো পরিবহণের মূল পথ। চিনের ৮০% পেট্রো আমদানি এই রাস্তা ধরেই। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে সরু প্রণালীটিই মাল্লাকা। এই মালাক্কা নিয়েই চিনের মাথাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। কারণ মালাক্কা প্রণালীর ঠিক মুখে সিঙ্গাপুরে মার্কিন নৌবাহিনীর উপস্থিতি।
তবে মনে করা হচ্ছে, ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রগুলির সঙ্গে লাঠি এবং গাজর নীতি নিয়ে কূটনীতি করে বেজিং। যে দেশকে ঘুষ দেওয়া সম্ভব তাকে ঘুষ দেয়। যাকে হুমকি দেওয়া সম্ভব তাকে হুমকি দেয়।চিনের পেট্রোরুটে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জও পড়ে। ভারতকে হুমকি বা ঘুষ, কোনওটাই দেওয়া সম্ভব নয়। তাই লাদাখে আক্রমণ। আর পাকিস্তানকে মদত জুগিয়ে ভারতকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা।