আজ ৩ নভেম্বর। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে গেল। প্রথম ভোট পড়ল নিউ হ্যাম্পশায়ারে। ভোটদান শুরু হতেই টুইট করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একটি ভিডিও পোস্ট করলেন তিনি। আগামী চার বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টকে নির্বাচন করছেন দেশের প্রায় ১৫.৩ কোটি নথিভুক্ত ভোটার। যা মোট ভোটদাতার ৬৫ শতাংশ। ইতিমধ্যেই করোনা মহামারীর জেরে মেল–ইন–ব্যালট বা ‘আর্লি ভোটিং’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটদান করেছেন অনেকেই। আর পরিসংখ্যান বলছে হোয়াইট হাউস দখলের দৌড়ে এগিয়ে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জো বিডেন।
আজ দ্বৈরথে নেমেছেন সত্তরোর্ধ্ব দুই বৃদ্ধ। জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী আপাতত এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। গুরুত্বপূর্ণ স্টেটগুলোতে তিনি বেশ আধিপত্য রেখে এগোচ্ছেন বলে সমীক্ষার পূর্বাভাস। ট্রাম্প সেখানে কট্টর রিপাবলিকান স্টেট ছাড়া তেমন সুবিধা করতে পারছেন না বলেই ভোট বিশ্লেষকদের দাবি। যদিও পপুলার ভোট তথা জাতীয় নির্বাচনের ভিত্তিতে করা এই সব সমীক্ষা সব সময় শেষ কথা বলে না।
উল্লেখ্য, আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট ভোটে জিততে গেলে নির্বাচকমণ্ডলীর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হয়। সেখানে কখনও একটি বড় রাজ্য প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে না। বরং একাধিক ছোট রাজ্য নির্ণায়ক হয়ে ওঠে। ৫০টি রাজ্যের মধ্যে এখানে এমন কিছু রাজ্য আছে যেগুলি ‘ডেমোক্র্যাট’ বলে পরিচিত। এই রাজ্যগুলি প্রধানত আমেরিকার দুই উপকূলে অবস্থিত। যেমন ক্যালিফোর্নিয়া বা নিউ ইয়র্ক। উপকূলে অভিবাসীরা ঐতিহাসিকভাবে ডেমোক্র্যাট দলের সমর্থক। এইসব রাজ্যে কখনওই দাঁত ফোটাতে পারে না রিপাবলিকানরা। আবার মধ্য আমেরিকায় যেখানে অভিবাসীরা তুলনামূলকভাবে জনসংখ্যার কম অংশ, সেখানে বিপুল শক্তি রিপাবলিকান পার্টির। মধ্য আমেরিকা মূলত কৃষিপ্রধান। এখানকার কৃষিজীবী, রক্ষণশীল শ্বেতাঙ্গরা রিপাবলিকানদের বিশাল ভোটব্যাঙ্ক। এই অঞ্চলে ডেমোক্র্যাটরা দাঁত ফোটাতে পারে না। সুতরাং ৫০টি রাজ্যের মধ্যে যে রাজ্যগুলি ডেমোক্র্যাট–রিপাবলিকানদের মধ্যে ভাগ হয়ে আছে, সেগুলি বাদ দিয়ে মার্কিন রাজনীতির হিসেবনিকেশ হয়। তাতে করে ফ্লোরিডা, আইওয়া, ওয়াইহো, পেনসেলভিনিয়ার মতো মিশ্র জনসংখ্যার রাজ্যগুলির গুরুত্ব সব নির্বাচনেই অনেক বেশি হয়।
এবারের ভোট সব দিক থেকেই আসলে আলদা। দেখা যাচ্ছে, এবার মানুষের মধ্যে ভোট দেওয়ার উৎসাহ যথেষ্ট বেশি। রবিবার দুপুর পর্যন্ত আর্লি ভোট পড়েছে প্রায় ৯ কোটি ৩০ লক্ষ। অর্থাৎ মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে ইতিমধ্যেই ভোট দিয়ে দিয়েছেন। আর এটাতেই চাপ বেড়েছে ট্রাম্পের, যত বেশি ভোট পড়বে ততটাই প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ভোট পড়ার সম্ভাবনা। তা যদি হয়, দ্বিতীয় বার হোয়াইট হাউসে বসার সুযোগ আর পাবেন না ট্রাম্প।