দেশ ব্রেকিং নিউজ

পুলিশ হত্যার পেছনে পুলিশই!‌

দাগি আসামি বিকাশ দুবেকে ধরতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশে শহিদ হয়েছিলেন ৮ পুলিশ কর্মী। কিন্তু বিকাশকে যে ধরতে যাওয়া হবে এই খবর বিকাশ ও তার দলবল পেল কী করে? এই প্রশ্ন ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই সাসপেন্ড করা হল চৌবেপুর থানার স্টেশন অফিসার বিনয় তেওয়ারিকে। ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলার মধ্যেই এই পুলিশ অফিসারকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ চলে এল। সরষের মধ্যে ভূত দেখছে পুলিশ। স্থানীয় থানার পুলিশদের মধ্যেই কেউ এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে তদন্ত করছে যোগীর পুলিশ।
কুখ্যাত অপরাধী বিকাশ দুবেকে ধরতে গিয়ে প্রাণ গেল একজন ডিএসপি–সহ ৮ পুলিশকর্মীর। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের কানপুরের অন্তর্গত বিকারু গ্রামের এই ঘটনা নানা প্রশ্ন সামনে এনে দিয়েছে। বিকাশকে ধরতে যে পুলিশি অভিযান হবে, এই খবর কি কেউ তাকে আগাম জানিয়ে দিয়েছিল। না হলে সে এরকম বিরাট প্রস্তুতি নিয়ে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালালো কী করে? সূত্রের খবর, তাঁকে খুন করার চেষ্টা করেছে বিকাশ বলে অভিযোগ নিয়ে চৌবেপুর থানায় যায় রাহুল তিওয়ারি নামে এক ব্যক্তি। কিন্তু অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন থানার দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসার বিনয় তিওয়ারি। এরপর রাহুল তিওয়ারি ডেপুটি সুপারিনটেন্ডেন্ট অব পুলিশ দেবেন্দ্র শর্মার কাছে বিকাশের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে।
জানা গিয়েছে, বিএসপি’‌র প্রাক্তন জেলা পঞ্চায়েত সদস্য বিকাশ দুবের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়। তার আগে থেকে অবশ্য তার বিরুদ্ধে ৬০টি বিভিন্ন ধরনের অপরাধের মামলা রয়েছে। বিকাশের মাথার দাম ধরা হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা। সেই বিকাশকে ধরতে তিনটি থানার পুলিশকর্মীরা শুক্রবার বিকারু গ্রামে হানা দেয়। গ্রামে ঢোকার রাস্তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে সেই রাস্তা সাফ করে দেওয়ার পরেই দুষ্কৃতীরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি চালাতে শুরু করে। ঘটনায় নিহত হন ডেপুটি সুপার পদমর্যাদার এক পুলিশ আধিকারিক, তিনজন সাব ইনস্পেক্টর আর চারজন কনস্টেবল।
এনকাউন্টার শুরুর আগেই ঘটনাস্থল থেকে উধাও হয়ে যায় চৌবেপুর থানার দায়িত্বে থাকা বিনয় তিওয়ারি। যেখান থেকে পুলিশের অনুমান চৌবেপুর থানার পুলিশ কর্মীদের সহযোগিতায় পুলিশি অভিযানের সব কথা আগে থেকে জানত বিকাশ দুবে। তাই বিনয় তিওয়ারিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কানপুর রেঞ্জের ইনস্পেকটর জেনারেল (আইজি) মোহিত আগরওয়াল জানান, ‘‌পুলিশের দলকে স্বাগত জানানোর জন্য বিকাশের লোকেরা বেশ প্রস্তুত ছিল। তাতেই সন্দেহ হয়, বিকাশকে এই খবর যে দিয়েছিল সে পুলিশেরই লোক। এটা যদি সত্যি হয়, তা হলে যে পুলিশকর্মী এই কাণ্ড করেছে তাকে জেলে পাঠানো হবে এবং তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে।’‌
ওই এনকাউন্টারে দেবেন্দ্র শর্মা–সহ মোট আটজন পুলিশ কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। দেবেন্দ্রকে আর এক কুখ্যাত অপরাধী প্রেম প্রকাশের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। এনকাউন্টারে প্রেম প্রকাশকে খতম করেছে পুলিশ। তবে এখনও অধরা মূল অপরাধী বিকাশ দুবে। খুন, অপহরণ–সহ ৬০টি মামলা রয়েছে বিকাশের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, থানায় ঢুকে মন্ত্রী সন্তোষ শুক্লাকে মেরে ফেলেছিল এই বিকাশ। সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে গিয়েছিল এই কুখ্যাত বিকাশ।