গত নভেম্বর মাসে এলাহাবাদ হাইকোর্ট উদ্বেগপ্রকাশ করেছিল। তখন থেকেই চাপ বেড়েছিল যোগী সরকারের উপরে। অবশেষে হাথরাসের বিতর্কিত জেলাশাসককে বদলির সিদ্ধান্ত নিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। কারণ হাথরাস ধর্ষণকাণ্ডে নির্যাতিতার দেহ ঘর নিয়ে যেতে দেয়নি পুলিশ। তার পরিবর্তে বিরাট পুলিশ বাহিনী দিয়ে রাতের অন্ধকারেই দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার নিশানায় চলে এসেছিলেন হাথরসের পুলিশ সুপার ও জেলাশাসক।
রাজ্যের মোট ১৬ জন আইএএস অফিসারকে বদলি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রবীণকুমার লস্কর। রাতের অন্ধকারে যে ভাবে হাথরাসের গণধর্ষিতার দেহ সৎকার করা হয়েছিল, সেজন্য তাঁকে ভর্ৎসনা করেছিল আদালত। পরে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করায় যোগী সরকারের ভূমিকা নিয়েও কার্যত প্রশ্ন তুলেছিল হাইকোর্ট। এবার সেই জেলাশাসক প্রবীণকুমার লস্করকে সরিয়ে দিল রাজ্য সরকার। তবে রাজ্যের মোট ১১ জেলার জেলাশাসককে বদলি করা হয়েছে। প্রবীণ কুমারের জায়গায় হাথরসের জেলাশাসক হচ্ছেন রমেশ রঞ্জন।
উল্লেখ্য, ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯ বছরের ওই যুবতীকে গণধর্ষণ করে অভিযুক্ত চার যুবক। শারীরিক অত্যাচারের ফলে তাঁর সারা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়। পরে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ওই তরুণীর মৃত্যু হলে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে গর্জে ওঠে গোটা দেশ। দেশজুড়ে শুরু হয় আন্দোলন। সমালোচিত হয় যোগী আদিত্যনাথ সরকারের ভূমিকাও।
অভিযোগ ওঠে জেলাশাসক প্রবীণকুমার নির্যাতিতা ওই দলিত তরুণীর বাড়িতে গিয়ে নাকি তার পরিবারের ওপরে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। পাশাপাশি পরিবারের লোকজন যাতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে না পারে তারও ব্যবস্থা করেন। প্রথমদিকে হাথরাস জেলা প্রশাসন মানতেই চায়নি যে ওই দলিত তরুণী গণধর্ষণের শিকার হন। শেষপর্যন্ত আদালতের চাপে ওই মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। একটি ভিডিও–তে দেখা যায়, তিনি নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে খোলাখুলি হুমকি দিচ্ছেন। ঠান্ডা স্বরে বলছেন, সাংবাদিকরা চলে যাবেন। কিন্তু তাঁদের এখানেই থাকতে হবে। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পরে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। কীভাবে মেয়েহারা অসহায় পরিবারকে তাঁদের দুঃসময়ে এভাবে হুমকি দিতে পারেন একজন জেলাশাসক, প্রশ্ন ওঠে তা নিয়ে।