দেশ ব্রেকিং নিউজ

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদন ‘এক দেশ এক ভোট’ প্রস্তাব

যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের মাহেন্দ্রক্ষণে দেশ ‘ভারত’। একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন আয়োজনের অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বুধবার মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে ‘এক দেশ এক ভোট’ প্রস্তাবটি পাস হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার এই নীতি বাস্তবায়নের পথে একধাপ এগিয়ে গেল।

‘এক দেশ এক ভোট’ কার্যকরের পথ অনুসন্ধানে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে কেন্দ্র সরকার। একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন আয়োজন করতে গত ১৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় ওই কমিটি।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলেন, সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে বিলটি উপস্থাপন করা হতে পারে। ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি দুই ধাপে কার্যকর করা হবে। তবে ভোটারদের জন্য একটি তালিকাই থাকবে।

অন্যদিকে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ ব্রায়েন মোদির মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, “এক দেশ এক ভোট’ আসলে বিজেপির আরেকটি গণতন্ত্রবিরোধী পদক্ষেপ।”

কংগ্রেস, তৃণমূলসহ অন্যান্য বিরোধী দল শুরু থেকেই ‘এক দেশ এক ভোট’ পদ্ধতির সমালোচনা করে আসছে। তাদের মতে, এই নীতির মাধ্যমে মোদি সরকার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতো ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। এটি সংসদীয় গণতান্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থী।

কংগ্রেসের প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, “এই প্রস্তাবটি বাস্তবসম্মত নয়। এটি জনগণের মনোযোগ সরানোর চেষ্টা। এটি সফল হবে না, জনগণ মেনে নেবে না। যখন নির্বাচন আসে এবং বিজেপির কাছে কোনো ইস্যু থাকে না, তখন তারা জনগণের মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে ফেলতে চায়।” তবে মোদি সরকারের মতে, এই নীতি কার্যকর হলে নির্বাচনের খরচ কমবে।

একটি ভোটার তালিকাতেই দুটি নির্বাচন হওয়ায় সরকারি কর্মীদের কাজের চাপ কমবে। ভোটের আদর্শ আচরণবিধির জন্য বারবার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না। নীতি আয়োগ, আইন কমিশন, নির্বাচন কমিশনও এই ভাবনাকে নীতিগত সমর্থন জানিয়েছে।

• প্রশ্ন হল, সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

সবার আগে সরকারকে সংসদে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ এই বিল আনতে হবে। যেহেতু এই বিলগুলো সংবিধান সংশোধন করবে, তাই সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন পেলেই সেগুলো তা হবে। অর্থাৎ লোকসভায় এই বিল পাশ করতে হলে কমপক্ষে ৩৬২ জন সদস্য এবং রাজ্যসভায় ১৬৩ জন সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হবে। সংসদ থেকে পাস করার পর, এই বিলের জন্য অন্তত ১৫টি রাজ্যের বিধানসভায় অনুমোদনের প্রয়োজন। এরপর রাষ্ট্রপতির সই হলেই এসব বিল আইনে পরিণত হবে।