বিদায়বেলায় কলঙ্কিত হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে তাণ্ডবে সমর্থকদের উস্কানি দেওয়ার জন্য ট্রাম্পকে ইমপিচড করলেন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের প্রতিনিধিরা। তার ফলে আমেরিকার সুদীর্ঘ ইতিহাসে এই প্রথম কোনও প্রেসিডেন্ট দু’বার ইমপিচড হলেন।
চূড়ান্ত ভোটের বেশ কয়েক মাস আগে সভায় তদন্ত ও শুনানি-সহ অতীতে ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হয়েছিলেন অ্যান্ড্রিউ জনসন, বিল ক্লিন্টন এবং ট্রাম্প। বছরখানেক আগে ইমপিচমেন্ট হয় ট্রাম্পের। ফের মার্কিন কংগ্রেসে তাঁর ইমপিচমেন্ট পাশ হয়েছে ২৩২–১৯৭ ভোটে। এমনকী ১০ জন রিপাবলিকানও এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি পর পর দু’বার ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হলেন। এতদিন ট্রাম্প হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলেও, ইমপিচমেন্টের পর তিনি তাঁর অনুগামীদের জানিয়েছেন, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। হিংসায় না জড়ানোর আর্জিও জানিয়েছেন। এবার গোটা বিষয়টি উঠবে সেনেটে। সেনেটে ট্রাম্প যদি দোষী প্রমাণ হয় তাহলে ২০২৪ সালে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না ট্রাম্প।
২০১৯ সালে তাঁর তৎকালীন প্রতিদ্বন্দ্বী জো বিডেনের বিরুদ্ধে কাদা ছোঁড়ার জন্য তিনি ইউক্রেনের নেতাকে চাপ দেওয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট হয়। তখন ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত মার্কিন কংগ্রেস তাঁর ইমপিচমেন্ট করে। তবে রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সেনেট গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়। এবারের ইমপিচমেন্ট ইউএস ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনার জেরে। গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডবের জেরেই ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হতে হচ্ছে ট্রাম্পকে। অর্থাৎ, ১৩ মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি ট্রাম্প।
ইমপিচমেন্টের বিতর্ক শুরুর আগে আব্রাহাম লিঙ্কন এবং বাইবেলকে উদ্ধৃত করে সংবিধানের রক্ষার জন্য সমস্ত আইনপ্রণেতারা যে শপথ নিয়েছিলেন, তা মেনে কাজ করার আর্জি জানান হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তিনি বলেন, ‘তার (ট্রাম্প) অবশ্যই যাওয়া উচিত। আমরা যে দেশকে ভালোবাসি, সেই দেশের পক্ষে বিপজ্জনক উনি।’
২০ জানুয়ারি জো বিডোনের শপথ নেওয়ার পর খুলবে সেনেট। এরপরই বিচার করা হবে। এক বছরের মধ্যে দুবার ইমপিচমিন্টের মুখোমুখি হল ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেয়াদ শেষ হওয়ার সাতদিন আগেই আমেরিকান কংগ্রেসে পাশ হয়ে গেল ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব। তবে প্রেসিডেন্টকে দোষী সাব্যস্ত করা বা বেকসুর করা উচিত কিনা সে বিষয়ে বিচার হবে সেনেটে। এরপর সেনেট জো বিডেনের ডেমোক্র্যাটিকদের আওতায় ঢুকে যাবে। তারা কীভাবে বিচার করবে সেই দিকেই তাকিয়ে বিশ্ব।