বাংলাদেশের জল, স্থল এবং রেলপথ ব্যবহার করে উত্তর–পূর্বাঞ্চলে পণ্য পরিবাহিত হলে সময় ও ব্যয় দু’টোই সাশ্রয় হয়। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে নৌপ্রোটোকল ও কানেক্টিভিটির আওতায় উত্তর–পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে জলপথে পণ্যপরিবহণ হয়ে আসছে। বাংলাদেশ–ভারতের মধ্যে আন্তর্জাতিক নৌপ্রোটোকলের আওতায় দাউদকান্দি–সোনামুড়া জলপথটি যুক্ত হয় ২০ মে। নতুন এই নৌরুটটি দিয়ে মাত্র তিন মাসের মাথায় ট্রায়াল রান সম্পন্ন হতে চলেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এই জলপথ চালুর মধ্য দিয়ে ত্রিপুরারবাসীর স্বপ্ন পূরণ হবে। কারণ এই নৌরুটে এত স্বল্প সময়ে ট্রায়াল রান করা আগে সম্ভব হয়নি। চট্টগ্রাম–মোংলা পোর্ট ব্যবহারে দুই দেশের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার প্রায় ১৮ মাস পর ট্রায়াল রান হয়েছে। অথচ দাউদকান্দি–সোনামুড়া নৌরুটে ট্রায়াল হচ্ছে মাত্র তিন মাসের মাথায়। এটা ত্রিপুরাবাসীর বহু দিনের আশা। আজ বিকালে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত মোক্তারপুর প্রিমিয়ার সিমেন্টের একটি জলযান সোনামুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়।
দাউদকান্দি–সোনামুড়া জলপথ খননের পর এই নৌরুট দিয়ে নিয়মিত পণ্যবাহী মাঝারি জাহাজ চলাচল করা সম্ভব হবে। অর্থ ও সময় দু’টোরই সাশ্রয় হবে। যার সুবিধা পাবেন ত্রিপুরার আমজনতা। আন্তর্জাতিক নৌপ্রোটোকল রুটের ডেপুটি ডিরেক্টর শর্মিলা খানম ট্রায়াল রানে যাওয়া জলযানটিকে ফুল দিয়ে বিদায় জানাবেন। এরপর নৌযানটি গিয়ে ভিড়বে বিবির বাজারের অদূরে সোনামুড়া নৌ–জেটিতে। সেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব উপস্থিত থাকবেন।
মনে করা হচ্ছে, এই রুট খুলে গেলে পূর্বাঞ্চলের অর্থনীতির দুয়ার খুলে যাবে। তার সঙ্গে গোমতীর বুকে উড়বে উন্নয়নের শঙ্খচিল। এই উদ্যোগের অংশীদার বাংলাদেশ। ত্রিপুরার সঙ্গে নতুন এই নৌরুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময়। উল্লেখ্য, গত ১১ আগস্ট বাংলাদেশের জলপথ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ–পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বিবির বাজার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত ৯২ কিলোমিটার নৌরুট পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশের অধিকাংশ সিমেন্ট ফ্যাক্টরি মেঘনা নদীর তীরে। দাউদকান্দিতে মেঘনার ব্রিজ ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকায় নারায়ণগঞ্জ বা পার্শ্ববর্তী মোক্তারপুর থেকে ২০ টন সিমেন্ট নিয়ে কোনও ট্রাককে নরসিংদী, ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং কুমিল্লা হয়ে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে বিবির বাজার স্থলবন্দরে পৌঁছতে হয়। এতে পরিবহণ ব্যয় বেড়ে যায়। এবার নৌপথটি চালু হলে নারায়ণগঞ্জ থেকে সোনামুড়ার দূরত্ব হবে মাত্র ১২৫ কিলোমিটার।