পুরাণ অনুযায়ী দক্ষরাজের সুন্দরী মেয়েদের নামকরণ করা হয়েছিল ২৭ টি নক্ষত্রের নাম অনুযায়ী। দক্ষরাজের দুই মেয়ে এক মাসের ব্যবধানে জন্মান, তাঁদের নাম ছিল চিত্রা এবং বিশাখা। চিত্রা থেকে নাম হয় চৈত্র মাসের এবং বিশাখা থেকে নাম হয় বৈশাখ মাসের।
চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে গ্রামবাংলায় প্রচুর নিয়ম প্রচলিত আছে। চৈত্র সংক্রান্তির ঠিক আগের দিন হয় নীল পুজো। কুমির তৈরি করে সেই কুমিরের গালে জ্বালানো হয় মোমবাতি, পুজো করা হয় বুড়ো শিবের। গ্রামে গ্রামে গাজনের দল নানান সুরে গান গাইতে থাকেন।
চৈত্র সংক্রান্তির দিন বড় তাল গাছের নিচে ডাবের জল, খেঁজুরের গুড়, পাকা কলা, দই, আটা বা ময়দা মিশিয়ে তৈরি করা হয় বিশেষ শিরনি। এই বিশেষ শিরনি দেওয়ার জন্য খুঁজে বার করা হয় গ্রামের মধ্যে সবথেকে বড় তালগাছটিকে।
আজও বহু জায়গায় নববর্ষের দিন মাখা হয় নিম পাতা এবং হলুদ বাটা। মনে করা হয় সারা বছরের নানান রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি দেয় নববর্ষের এই নিম হলুদ।
এদিন আয়োজন করা হয় চড়কের মেলার। চড়ক পুজোর আগের দিন চড়ক গাছকে ভাল করে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়। তারপর জলভরা একটি পাত্রে শিবলিঙ্গ রাখা হয়, যা ‘বুড়োশিব’ নামে পরিচিত। এই পুজো করেন পতিত ব্রাহ্মণরা। চড়কগাছে সন্ন্যাসীদের চাকার সঙ্গে বেঁধে দ্রুতবেগে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। পিঠে, হাতে, পায়ে, শরীরের অন্যান্য অঙ্গে জ্বলন্ত বাণ শলাকা ঢুকিয়ে দেওয়ার রীতিও রয়েছে। এছাড়াও জ্বলন্ত অঙ্গারের ওপর হাঁটা, গায়ে ধারালো জিনিস ফোটানো, ধারালো কিছুর ওপর লাফানো, এসব করা হয় এই চড়কে।
চৈত্র সংক্রান্তি গ্রামবাংলার মানুষের কাছে একটি বিশেষ দিন। বাংলার বহু জায়গায় এই দিনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন নিয়ম প্রচলিত রয়েছে ।