তৃতীয় ঢেউ শহরে সেভাবে আছড়ে নাও পড়তে পারে। ব্যাপক সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায়। জেলা ও স্বাস্থ্যজেলায় সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। বিশেষজ্ঞরা জানান, কলকাতাঁ–সহ রাজ্যের প্রধান শহরগুলিতে প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউতে বহু মানুষ হয় ইতিমধ্যেই সংক্রমিত, নয়তো অনেকেই টিকার ন্যূনতম একটি ডোজ পেয়ে গিয়েছেন। তুলনায় গ্রামেগঞ্জে টিকাকরণের পরিমাণ কম হয়েছে। তাই এই চিন্তা আরও বেড়েছে।
রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন, কলকাতা ও রাজ্যের প্রধান শহরগুলিতে টিকাদান বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হল, ওইসব জায়গাগুলিতে কেন্দ্রের পাঠানো টিকা রাজ্য সরকার যেমন বিপুল পরিমাণে দিয়েছে, একইভাবে বহু বেসরকারি হাসপাতাল অর্থের বিনিময়ে অসংখ্য মানুষকে টিকা দিয়েছে এবং দিয়ে যাচ্ছেও। গ্রামীণ এলাকায় সেই সংখ্যক বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোম নেই। সামগ্রিকভাবে টিকাদানও তুলনামূলক কমই হয়েছে।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, বাঁকুড়া (সিমলাপাল এলাকা), বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলা, ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুর—এই পাঁচ এলাকায় সংক্রমণ লাগাতার অন্যান্য জায়গার তুলনায় বেশি থাকছে। উত্তরবঙ্গের মধ্যে সংক্রমণ বেশি থাকছে দার্জিলিংয়ে। সংক্রমণের খুঁটিনাটি দিক যাতে এড়িয়ে না যায়, প্রতি মুহূর্তে সতর্ক নজর রাখতে বলা হয়েছে জেলাগুলিকে। পাশাপাশি মাস্ক, দূরত্ববিধি ইত্যাদি করোনা মোকাবিলার প্রধান হাতিয়ারগুলি মানার ব্যাপারেও কড়াকড়ি করতে বলা হয়েছে।
কীভাবে মোকাবিলা সম্ভব? দপ্তরের পদস্থ কর্তারা জানাচ্ছেন, এক, এই পাঁচ–ছ’টি জায়গায় টিকাকরণ বাড়ানো দুই, সামগ্রিকভাবে গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন গঞ্জ ও হাটে করোনা বিধি কতটা মানা হচ্ছে, সেদিকে নজর রাখা। তিন, সরকারি টিকাকরণের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালকেও গ্রামে টিকাকরণে এগিয়ে আসতে উৎসাহ দিতে হবে।
প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় বহু জায়গাতে এখনও টিকাকরণ শুরু করা যায়নি বলে স্বীকার করেছেন রাজ্য হেলথ ডিরেক্টরেটে টিকাকরণের শীর্ষকর্তা ডাঃ অসীম দাস মালাকারও। তিনি বলেন, ‘তুলনামূলকভাবে বেশি জনঘনত্বের গ্রামীণ এলাকায় টিকাকরণ চলছে। অবশ্য কোথায় কোথায় টিকাকরণে প্রাধান্য দেওয়া হবে, সেটা স্থানীয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত।’