জেলা

বাঁকুড়ার জাম্বো জিলিপি, একেকটির ওজন তিন কেজি!

জিলিপি ভালোবাসেন না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তবে শুধু বাঙালি নয়, জিলিপির প্রেমে মজেছেন উত্তর ভারত-সহ পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও তুরস্কের মানুষজনও। বিভিন্ন এলাকায় জিলিপির আকার ও আকৃতি বিভিন্ন রকম। সেরকমই এক বাঁকুড়ার জাম্বো জিলিপি। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এই জিলিপির আকার অনেকটাই বড়। শুনলে অবাক হবেন, এর একেকটির ওজন দেড় থেকে তিন কেজি পর্যন্ত হয়। শুধু ওজন ও আকার নয়, বাঁকুড়ার জাম্বো জিলিপির আরেকটি বৈশিষ্ট্য আছে। এই জাম্বো জিলিপির প্যাচে ফুটে ওঠে আকর্ষণীয় নকশাও।

একমাত্র বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ায় এই জাম্বো জিলাপি পাওয়া যায়। তবে এখানকার কারিগরেরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে জাম্বো জিলিপি তৈরি করেন। তবে ঝাড়খন্ড লাগোয়া বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া এলাকার জাম্বো জিলিপি জগৎ বিখ্যাত। দশকের পর দশক ধরে প্রতি বছর ভাদ্র সংক্রান্তিতে এই এলাকায় জাম্বো জিলিপি তৈরি করছেন। মূলত বিশ্বকর্মা ও ভাদু পুজো উপলক্ষে তৈরি হয় এই বিশেষ জিলিপি। আর এর টানে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ।

আকার, ওজন এবং দুর্দান্ত নকশার জন্য বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার এই জাম্বো জিলিপির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে বাঁকুড়ার সীমা ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা ও রাজ্যেও। পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান জেলা ও ঝাড়খণ্ড, দিল্লিতেও এখানকার কারিগররা জাম্বো জিলিপির কদর রয়েছে। প্রতি বছরই বিশ্বকর্মা পুজোতে প্রচুর অর্ডার আসে এখানকার মিষ্টি ব্যবসায়ীদের কাছে। তাই এই সময়টা অন্যান্য মিষ্টি তৈরি করেন না মিষ্টি ব্যবসায়ীরা।

আগেই বলেছি, জাম্বো জিলিপির আকার অনেকটাই বড়। বড় কড়াইয়ের পুরোটা জুড়েই ভাজা হয় জাম্বো জিলিপি। এর প্যাচে অদ্ভুত দক্ষতায় নানান ধরনের অপূর্ব নকশা ফুটিয়ে তোলেন কারিগররা। এক থেকে তিন কেজি পর্যন্ত হয় একেকটা জিলিপির ওজন। তাই পিস হিসেবে নয়, কেজি দরে বিক্রি হয় জাম্বো জিলিপি। এই বছর ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে এই জিলিপি। তবুও নেই বিক্রিবাট্টা। বিশ্বকর্মা পুজোয় স্থানীয়ভাবে কিছু অর্ডার এলেও ঝাড়খন্ড বা পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে সেভাবে অর্ডার আসেনি এবার। মিষ্টি ব্যবসায়ীদের দাবি, গত দুই বছরে করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের মারণ থাবায় ধসে গিয়েছে জাম্বো জিলিপির ব্যবসা। এ বছর বিধিনিষেধ কম থাকায় আশা ছিল ফের চাহিদা বাড়বে। কিন্তু সেটা হয়নি, তাই মাথায় হাত বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ায় মিষ্টি ব্যবসায়ীদের। এক মিষ্টি ব্যবসায়ীর দাবি, সারাদিনে পঞ্চাশটির মতো জাম্বো জিলিপি বিক্রি হচ্ছে। বিশ্বকর্মা পুজোর দিনও সেভাবে বিক্রি নেই। এখন আশা ভাদু পুজোর বাজার।