চোখ দান করা আর হল না। ভেঙে গেল দীর্ঘ দিনের নিয়ম। এ বছর অবশ্য সবই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই চলছে। তবে এ ক্ষেত্রে করোনা দায়ি নয়। করোনা আক্রমণের অনেক আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল এই অনিয়মের। গ্রহ,নক্ষত্র,পাঁজি মেনেই এবার মহালয়ার সকালে দেবী দুর্গার চক্ষু দান হল না।
মহালয়া মানেই ছিল পুজোর আগমন। আকাশে বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ। সকালের ঘাসে শুরু হওয়া শিশিরের উঁকিঝুঁকি,এধারে ওধারে ফুটতে শুরু হওয়া কাশ ফুল, শরতের মেঘ, এরই মধ্যে একদিন ভোরে ‘বাজল তোমার আলোর বেণু’ জানিয়ে দিত মাতৃ পক্ষের সূচনার কথা। কিন্তু আজ মহালয়া হল তবু শুরু হল না মাতৃ পক্ষের। কারণ পুজোর এখনও ৩৫ দিন বাকি। পুরোহিত তপন ভট্টাচার্য জানালেন,”এবার ভাদ্র মাসে দুটো অমাবস্যা থাকায় এই মাস নিয়ম অনুযায়ী মল মাস। পুজোর আগে যেহেতু আরও একটা অমাবস্যা আছে তাই সেদিন থেকে মাতৃ পক্ষের সূচনা হবে।”
অপর দিকে দীর্ঘ দিনের যে চল পটুয়া পাড়ায় ছিল এবার তাও আর হল না। প্রতিমা শিল্পীরা প্রথা মেনে মহালয়ার সকালে দেবী প্রতিমার চোখ আঁকতেন। কারণ প্রতিমার রঙয়ের কাজের সব শেষে চোখ আঁকেন শিল্পীরা। আর তার চার পাঁচ দিনের মাথায় শুরু হয়ে যেত পুজো। কিন্তু এবার মহালয়া আর পুজোর মধ্যে মাসখানেকের বেশি সময় থাকায় প্রতিমায় সবে মাটির প্রলেপ লেগেছে। উত্তর ২৪ পরগণার বিখ্যাত প্রতিমা শিল্পী বাঞ্ছা পাল বললেন,” এত আগে প্রতিমায় রঙ করলে সেই রঙয়ের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাছাড়া মাতৃ পক্ষের সূচনার ভোরেই এই চক্ষু দানের রীতি। তাই এবার মহালয়ার ভোরে মা চোখ মেললেন না।”