সন্তানকে আদর-ভালোবাসা যেমন দিতে হয় তেমনি সঠিক পথে রাখার জন্য শাসনও করতে হয়। অনেকসময় বাবা-মায়ের অতিরিক্ত স্নেহ আদর সন্তানকে নষ্ট করে দিতে পারে। ভাবতে শুরু করে তারা ইচ্ছেমতো যা খুশি করতে পারে। এই ধরনের আচরণগত সমস্যা অনেক অভিভাবক খেয়াল করতে পারেন, আবার অনেকে পারেন না।
বড়দের অসম্মান করা – বড়দের সঙ্গে খোলামেলাভাবে মেশা বা মন খুলে কথা বলতে পারা স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের লক্ষণ। তবে খোলামেলা সম্পর্কের নামে তাদের অসম্মান করে কথা বলা বা অসংবেদনশীল আচরণ করা মোটেও ঠিক নয়। সন্তানকে এই ধরনের আচরণে কখনই উৎসাহ দেওয়া যাবে না। বরং এমন করতে দেখলে তাকে সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে। প্রথম অবস্থায় এমন আচরণ খুব একটা দৃষ্টিকটু না লাগলেও পরে তা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যেতে পারে। বা তার ব্যক্তিত্বের একটা অংশেও পরিণত হতে পারে।
যখন তখন বদমেজাজ – আচরণগত সমস্যা আছে এমন শিশুরা সব কিছু নিজেদের ইচ্ছা মতো পেতে চায়। এর ব্যতিক্রম ঘটলে তারা ঘরে এমনকি বাইরেও জিনিসপত্র ছোড়াছুড়ি করে বা অন্যান্য বিশৃংখল আচরণ করে যা সবসময় মজাদার নাও হতে পারে। তাই শিশুর এমন আচরণকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। আর সব কিছুই যে তার ইচ্ছা মতো হবে না সে শিক্ষাও দিতে হবে।
সব সময় পুরষ্কারের প্রলোভন দেখাতে হয় – সন্তানকে শান্ত রাখার জন্য প্রায় সময় কি তাকে পুরস্কারের প্রলোভন দেখাতে হয়? সহজ বাংলায় যাকে বলে ‘ঘুঁষ’। এটা হতে পারে শিশুর বাজে আচরণের একটা লক্ষণ। তাই কোনো কিছু চাইলেই সঙ্গে সঙ্গে না দিয়ে বরং ‘না’ শুনতে কেমন লাগে সেটার একটা পরীক্ষা চালানো যেতে পারে। যদিও প্রথম প্রথম এই ‘না’ শোনার কারণে বাসার পরিবেশ জটিল আকার ধারন করতে পারে। তবে ধীরে ধীরে সে, নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ ঘটার অভিজ্ঞতাও লাভ করবে।
অন্যদের নিয়ে মজা করা – সংবেদনশীলতার অভাব আচরণগত সমস্যার লক্ষণ। সন্তান যদি অন্যদের সঙ্গে অকারণ মশকরা করে বা দুঃখ দিয়ে কথা বলে তাহলে শুরুতেই তার ভুল ধরিয়ে দিয়ে শুধরে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এমন আচরণ দীর্ঘদিন অনুশীলন করতে দেওয়া তার ভবিষ্যতের জন্য অমঙ্গল বয়ে আনবে।
পালটা জবাব – যেসব শিশুদের মাঝে আচরণগত সমস্যা আছে তারা কখনই নিজেদের ভুল স্বীকার করতে চায় না। বরং তারা বড়দের কথা ও উপদেশের তোয়াক্কা না করে বরং মুখের ওপর পালটা জবাব দেয়। আর কথার খুঁত ধরে বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে। সন্তানের মাঝে এমন আচরণ দেখা দিলে শুরু থেকেই তার ভুল ধরিয়ে দিতে হবে। আর পরে যেন বড়দের অসম্মান না করে সেই শিক্ষা দিন।
কখনই সন্তুষ্ট নয় – সন্তানের জন্য যা করছেন বা তাকে যা দিচ্ছেন তার কোনো কিছুতেই সে সন্তুষ্ট হয় না- এরকম হলে বুঝতে হবে সে ইতোমধ্যে বিগড়ে গেছে। এই ধরনের শিশুদের আচরণগত কিছু সমস্যা থাকে যা ঘরে ও বাইরে বাজেভাবে প্রকাশ করে তারা। এমন শিশুদের চাহিদার কোনো শেষ নেই এবং কোনো কিছুতে সন্তুষ্টিও নেই। তাই সন্তানকে সুশিক্ষা দিতে, চাওয়া মাত্রই তাকে সব কিছু না দিয়ে বরং চাহিদা ও প্রয়োজনের পার্থক্য বোঝাতে চেষ্টা করতে হবে।