শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে হেভিওয়েটদের নাম উঠে আসতেই ব্যাপক চাপে পড়েছে রাজ্য সরকার । সোমবার, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে পদ থেকে অপসারণ করে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতে জাল নথি পেশের দায়ে এই নির্দেশই দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একই সঙ্গে মঙ্গলবার দুপুর ২টোর সময় তাঁকে ১৭ নম্বর এজলাসে হাজিরা দিতে বলা হয়।
হাজিরা এড়াতে রক্ষাকবচ চেয়ে আবেদন করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পর্ষদ সভাপতি। তবে আদালতে যেতেই জোর ধাক্কা খেলেন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। জানা যায় পর্ষদ সভাপতির এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্বে নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বে সামলাবেন পর্ষদের সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচি।
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে বেশ কিছু নথি জমা দিতে বলেছিল আদালত। মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,‘মানিক ভট্টাচার্য যে নথি জমা করেছে তা ভুয়ো। মানিকবাবুর কাছে ২০১৭ সালের নথি চাওয়া হয়েছিল। উনি ২০২২ সালে ভুয়ো নথি বানিয়ে আদালতে পেশ করেছেন।’ এরপরই অবিলম্বে মানিকবাবুকে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে রাজ্যে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। নিয়োগের জন্য ‘টেট’ হয় ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর। ফলপ্রকাশ হয় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। ওই বছরই প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ করে প্রাথমিক পর্ষদ। ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রায় ২৩ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী ‘টেট’ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৪২ হাজার প্রার্থীকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। বেআইনি ভাবে দ্বিতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, এই দাবিতে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন রমেশ আলি নামে এক ব্যক্তি।