নির্ধারিত সময়ের আগেই চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। চলতি খরিফ মরশুমে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ৪৬ লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল সরকারের। ২৪ আগস্ট পর্যন্ত ৪৫ লক্ষ ৩৬ হাজার টন ধান কিনেছে সরকার। ফলে আগস্টের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এখনও পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে যে ধান সংগৃহীত হয়েছে তা দিয়ে বছর খানেক রেশন ছাড়াও স্কুলের মিড ডে মিল প্রকল্প, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র প্রভৃতির চালের চাহিদা মেটানোর পরেও কিছুটা অতিরিক্ত থেকে যাবে। সরকারি উদ্যোগে সংগৃহীত ধান থেকে প্রায় ৩১ লক্ষ টন চাল মিলবে। সেখানে সব মিলিয়ে চালের চাহিদা প্রায় ২ লক্ষ ৪২ হাজার টন। অর্থাৎ বছরে চালের চাহিদা থাকে প্রায় ২৯ লক্ষ টন।
সরকারি উদ্যোগে কেনা ধান ভানিয়ে রাইস মিলগুলি যাতে তাড়াতাড়ি চাল সরবরাহ করে সেব্যাপারে খাদ্যদপ্তর এখন বিশেষ সক্রিয়। সরকারি ধান নিয়ে রাইস মিলগুলি চাল দেয়নি এমন একাধিক ঘটনা অতীত ঘটেছে। পুলিসে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর সিআইডি তদন্ত বেশ কয়েকজন মিল মালিককে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু ফৌজদারি মামলা চললেও চাল ফেরত না পাওয়ায় আর্থিক ক্ষতি হয় সরকারের। এটা আটকাতে এখন আগাম কড়া ব্যবস্থা নেয় সরকার।
রাইস মিল মালিকদের কাছ থেকে ধানের পরিমাণ অনুযায়ী ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি নেওয়া হয়। চাল না ফেরত দিলে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির টাকা বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে। এই ব্যবস্থা গ্রহণে ফলও মিলেছে। এখনও পর্যন্ত মিলগুলিতে যে পরিমাণ ধান পাঠানো হয়েছে তার ভিত্তিতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৩১ লক্ষ টন চাল। এর মধ্যে ২৫ লক্ষ টন চাল ইতিমধ্যে সরকারকে সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি আছে ৫ লক্ষ ৭৯ হাজার টন চাল।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন গুদামে মোট ৮ লক্ষ ৩৭ হাজার টন চাল মজুত করার ব্যবস্থা আছে। এখন সেখানে প্রায় ২ লক্ষ টন চাল রাখার মতো জায়গা রয়েছে। খাদ্যদপ্তর সূত্রে খবর, চলতি বছরে রাজ্য সরকার সব থেকে বেশি ৫ লক্ষ ২৯ হাজার টন ধান কিনেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে হুগলি (৪ লক্ষ ২৪ হাজার টন) ও মুর্শিদাবাদ (৪ লক্ষ ৪ হাজার টন)। চতুর্থ স্থানে আছে বীরভূম (২ লক্ষ ৯৩ হাজার টন)। ২১টি জেলার মধ্যে সবথেকে কম ধান কেনা হয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা (৫৪ হাজার ৩৬২ টন) থেকে।