দেশ লিড নিউজ

রাজ্য বিজেপিতে কী বড় রদবদল?‌ শুভেন্দু যোগে বাড়ল জল্পনা

তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করতে চান শুভেন্দু অধিকারী?‌ রাজ্য–রাজনীতিতে এই প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে শুভেন্দু জল্পনা বাড়িয়েছেন স্বামী বিবেকানন্দের বাণী আউরে। তিনি বলেছেন, আমি আমি করলে কখনও বড় কাজ করা যায় না। তার প্রেক্ষিতে ওই জেলায় দাঁড়িয়ে কলকাতার বিদায়ী মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে বলতে শোনা গেল, পথ বলে আমি দেব, রথ বলে আমি। যার জবাবও দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‌ছোটলোকদের কথার আমি উত্তর দেব না। কুকুর কামড়ালে মানুষ কী কুকুরকে কামড়ায়।’‌ এই পরিস্থিতিতে নিউজ এক্সপ্রেস তার বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়েছে, আগামী ৬ নভেম্বর বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন রাজ্যের দাপুটে নেতা তথা পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
এখন বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে রাজ্য–রাজনীতিতে ব্যাপক রদবদল হতে চলেছে। বিজেপি’‌র একটি সূত্র বলছে, আগামী ৫ তারিখ বিজেপি’‌র রাজ্য সভাপতি পদে রদবদল ঘটতে পারে। তাহলে কী শুভেন্দু হবেন পরবর্তী বিজেপি’‌র রাজ্য সভাপতি?‌ সূত্রটি জানাচ্ছে, না। তেমনটা নাও হতে পারে। তবে অমিত শাহ যখন জেলায় উপস্থিত থাকবেন তখন শুভেন্দু তাঁর হাত ধরেই বিজেপিতে যোগ দেবেন।
কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল?‌ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানান, তৃণমূলে এখন পরিবারতন্ত্র চলছে। শুভেন্দু মাঠে–ময়দানে রাজনীতি করে উঠে আসা তরুণ তুর্কি। সেখানে কিছু না করেই ক্ষমতার অলিন্দে ঢুকে ক্ষমতা ভোগ করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যা মেনে নিতে পারেননি শুভেন্দু। এই একই অভিযোগ ছিল মুকুলেরও। তবে সম্প্রতি জেলা কমিটির পরিবর্তন করে তৃণমূল। শুভেন্দু আশা করেছিলেন দিদি তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা দেবেন। কারণ পূর্ব–পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ৪২টি আসন বারবার তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু তা ঘটেনি। শুভেন্দু বুঝতে পেরেছিলেন তিনি কোনওদিন সেকেন্ড ম্যান হতে পারবেন না দলের। অর্থাৎ হতে দেওয়া হবে না। তারপর থেকেই ‘‌আমরা দাদার অনুগামী’‌ ব্যানারে ছবি বসে শুভেন্দু অধিকারীর। আর জনসংযোগ কর্মসূচি করতে থাকেন। এই কর্মসূচি করতে গিয়েই শুভেন্দু বলেন, ‘‌আমি প্যারাসুটে উঠিনি, লিফটে নামিনি। সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে উপরে উঠেছি।’‌ সুতরাং এই মন্তব্য করা উদ্দেশ্যে তা বলার অপেক্ষা রেখে না।
এখন প্রশ্ন উঠছে, এটা কী মমতার দলের কফিনে প্রথম পেরেক পড়তে চলেছে?‌ এই ঘটনা ঘটলে জেলায় জেলায় কী তৃণমূলের সংগঠন ভেঙে যাবে?‌ শুধু পূর্ব বা পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, অন্যান্য অনেক জেলা থেকে তৃণমূলের নেতা, কর্মী এবং সমর্থকরা বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ শুভেন্দুর সাংগঠনিক বিস্তার অনেক দূর পর্যন্ত গিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগণা এবং মুর্শিদাবাদেও ছড়িয়ে আছে। ইতিমধ্যেই অনেকে শুভেন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে খবর। সম্প্রতি শুভেন্দু জানান, তাঁর করোনা হওয়ার পর অনেকে যোগাযোগ করেছিলেন। আর তা দল এবং দলের বাইরে অন্য দলেরও অনেকে। তাঁরা নাকি বলেছেন, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন। গেট ওয়েল সুন। সুতরাং এই কথাতেই যে শেষ হয়েছিল ফোন তা নয় বলে মনে করছেন অনেকে। কথা হয়েছে আরও অনেক। যা ক্রমশ প্রকাশ্যে আসতে চলেছে। এদিন বিজেপি’‌র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‌আমরা দরজা বড় করে খুলে রেখেছি সবাইকে নেওয়ার জন্য। ওনারা যদি কাউকে পাঠিয়ে দেন আমরা দলে নেব। একজন রাজনীতিবিদ রাজনীতি করতে চাইলে বিজেপি সুযোগ দেবে। আমার সঙ্গে অবশ্য কারও কোনো আলোচনা এখনও হয়নি।’‌ আর রবিবার সাংসদ সৌমিত্র খান তো শুভেন্দুকে দলে স্বাগত জানালেন।