অবশেষে গেরুয়া বসনই পরলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক (একদা) শুভেন্দু অধিকারী। আর সঙ্গে সঙ্গে সব জল্পনার অবসান হল। শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দিয়ে তৃণমূলের দাপুটে নেতা তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’অমিত শাহ আমার বড় ভাই, আমার দাদা। কোভিড আক্রান্ত হওয়ার সময় দু’বার খোঁজ নিয়েছেন। অথচ ২১ বছর যাদের জন্য করেছি, তারা খোঁজ নেয়নি।’ মেদিনীপুর কলেজ মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দিয়ে পুরনো দলের প্রতি এমনি আভিমান শোনা গেল শুভেন্দু অধিকারীর গলায়।
এদিন শুভেন্দু অধিকারীর হাতে পদ্মপতাকা তুলে দেন অমিত শাহ। তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন শিশিরপুত্র। এরপর শুভেন্দু বলতে শুরু করেন, ‘আজকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পার্টিতে যোগ দিলাম। জাতীয়তাবাদ, বহুত্ববাদ, দেশপ্রেমে বিশ্বাস করে এই দল। বসুধৈব কুটুম্বকম, সর্বজন হিতায় সর্বজন সুখায় আদর্শ মেনে চলে।’ অর্জুন সিংয়ের দৃঢ় মানসিকতার প্রশংসা করেন শুভেন্দু। বলেন, অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে একশো মামলা করেছে। কিন্তু তবুও তিনি মাথানত করেননি।
মুকুল রায় তাঁকে বিজেপিতে যোগদানে উৎসাহিত করেছেন বলেও মন্তব্য করেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘আমায় মুকুল রায় বলেছিলেন, আত্মসম্মানবোধ থাকলে তৃণমূলে থাকবি না। তুই বিজেপিতে চলে আয়। তাঁর কথা রাখতে পেরেছি।’
নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘আমি ধাপে ধাপে সিঁড়ি বেয়ে ছাত্র রাজনীতি থেকে এখানে উঠে এসেছি। আমাকে বিশ্বাসঘাতক বলছে। কারা বলছে? ১৯৯৮ সালে যখন তৃণমূল প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এনডিএ’র শরিক ছিল তৃণমূল। তারপর কি করেছিল তারা? ১৯৯৯ সালে আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। মমতা বলেছিলেন, ‘দলগঠনের পর কাঁথিতে লড়ে দ্বিতীয় হয়েছিলাম’। অর্থাৎ, অধিকারীদের বাদ দিয়ে আপনি দ্বিতীয় হয়েছিলেন। হ্যাঁ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবারও প্রথম হতে পারবেন না, দ্বিতীয় হবেন। বিজেপি প্রথম হবে।’
তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন। তাই তাঁর সংগঠন মজবুত। পাশাপাশি শুভেন্দু বলেন, ‘আমার মা গায়ত্রীদেবী। আর দেশ আমার মা। আর কেউ আমার মা নয়। যখন তৃণমূলের কর্মী ছিলাম, নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছি। তখন বলেছি, বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও। এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছি, তাই স্লোগান তুলব–তোলাবাজ ভাইপো হঠাও।’
তবে কি শেষে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন দল ত্যাগের গোপন কারণের, তেমনই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।