ব্রেকিং নিউজ রাজ্য

বিধায়ক পদে ইস্তফা শুভেন্দুর

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে পাকাপাকিভাবে সম্পর্কছেদের প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত করলেন শুভেন্দু অধিকারী। মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার দু’‌সপ্তাহ পর বুধবার বিধায়ক পদও ছাড়লেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। কাঁথির বাড়ি থেকে কলকাতা আসেন তিনি। তখন অধ্যক্ষ না থাকায় বিধানসভার সচিবের ঘরে গিয়ে ইস্তফাপত্র জমা দেন তিনি। যার জেরে একুশের নির্বাচনের আগেই জনপ্রতিনিধিশূন্য নন্দীগ্রাম। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‌সচিবকে দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীর ইস্তফা গৃহীত হবে না।’‌
এরপর ইস্তফা পত্রটি ই–মেল করা হয়েছে স্পিকারের কাছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধানসভার মূল ফটক ছাড়েন তিনি। এবার তৃণমূলের মহাসচিবের কাছে গিয়ে তিনি দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দেবেন মনেই মনে করা হচ্ছে। আগামীকালই দিল্লিতে যাবেন তিনি। শনিবার বিজেপিতে যোগদান করবেন। এরপর অমিত শাহের সঙ্গে রাজ্যে ফিরবেন তিনি। যদিও আজও তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কোনও মন্তব্যই করেননি শুভেন্দু অধিকারী। তবে এটা বড় ধাক্কা তৃণমূলের কাছে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিধায়ক হিসেবে শুভেন্দুর যাত্রা শুরু ২০০৬ সালে। সে বছর তিনি কাঁথি দক্ষিণ থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। ঠিক পরের বছর থেকে অর্থাৎ ২০০৭ সাল থেকে নন্দীগ্রামে কৃষিজমিতে শিল্পস্থাপন নিয়ে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের বিরোধিতায় আন্দোলনে নামেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কৃষকদের পক্ষে লড়াই করেছেন মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র। এরপর ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে পরপর দু’বার শুভেন্দু তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়ক হন এবং রাজ্যের মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পান।
ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, আর জল্পনা নয় শেষপর্যন্ত বিজেপিতেই যোগ দিতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী! ১৭ ডিসেম্বর দিল্লিতে যাচ্ছেন তিনি। এরপর শনিবার নিজের গড়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেবেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু অধিকারীর মন্ত্রী পদ থেকে সরে যাওয়ার পরও একবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে প্রশান্ত কিশোর এবং দলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়ের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পরও সৌগত রায় আশাপ্রকাশ করেছিলেন যে সমস্যা মিটে যাবে। দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকের কথা কেন তিনি প্রকাশ্যে এনেছেন, তা নিয়ে সৌগতর প্রতি তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দেন শুভেন্দু। এসএমএস করে স্পষ্ট জানান, এভাবে একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়।