রাজ্য

কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে সুস্মিতা দেব

অবশেষে তৃণমূলেই যোগ দিলেন কংগ্রেস ত্যাগী নেত্রী সুস্মিতা দেব। শিলচরের প্রাক্তন সাংসদ আজই কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেন। তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন সোনিয়া গান্ধীর কাছে। তারপরই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন সুস্মিতা। গন্তব্য ছিল কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস। সেখানে অভিষেক–সুস্মিতার দীর্ঘ সময় ধরে বৈঠক হয়। তারপর সেখানেই তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন।

সবুজ বিগ্রেডে যোগ দিলেন শিলচরের নেত্রী। তারপরেই নবান্ন গেলেন তিনি। তৃণমূলের উত্তরীয় গলায় পরেই অভিষেকের সঙ্গে নবান্নে গেলেন সুস্মিতা। অসমে বড় দায়িত্ব দিতে পারেন সুস্মিতাকে বলে সূত্রের খবর। মমতার আশীর্বাদ নিয়ে এখন থেকেই তৃণমূলের হয়ে কাজ শুরু করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন সুস্মিতা। কংগ্রেস ছাড়ার পরই সুস্মিতা দেবের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ নিয়ে জল্পনা বাড়ছিল। ত্রিপুরার পাশাপাশি অসমেও মাটি শক্ত করতে চাইছে তৃণমূল। সেক্ষেত্রে সুস্মিতা দেবকে মুখ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বাংলার শাসকদল। সুস্মিতা দেবের মতো একজন নেতৃত্ব দল ছাড়ায় স্বভাবতই অবাক কংগ্রেসের বহু নেতা। যদিও সোনিয়া গান্ধীকে লেখা চিঠিতে দলত্যাগের কোনও কারণ উল্লেখ করেননি সুস্মিতা দেব।

অসমের শিলচরের প্রাক্তন সাংসদের কংগ্রেস ছাড়ার খবর সকালেই ছড়িয়ে পড়ে। শোরগোল পড়ে জাতীয় রাজনীতিতে। জল্পনা শুরু হয়, তবে কি এবার তৃণমূলে যোগ দেবেন তিনি? সেই জল্পনা উসকে কলকাতায় চলে আসেন কংগ্রেসের মহিলা শাখার জাতীয় সভানেত্রী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বৈঠক পূর্বপরিকল্পিতই ছিল। সুস্মিতা দেব জানান, তিনি জনসেবার নতুন অধ্যায় শুরু করছেন। সিএএ বিরোধী আন্দোলনের মুখ অখিল গগৈকেও দলে এনে অসমে সংগঠন মজবুত করতে চাইছে তৃণমূল। তবে অখিলের তৃণমূলে যোগদান এখনও দিনের আলো দেখেনি। তবে সুস্মিতা দেবের সেই দেরিটুকুও হল না। কিন্তু কেন সুস্মিতাকে দলে টানল রাজ্যের শাসকদল? সুস্মিতার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জ্ঞান। ৩০ বছরের বেশি তিনি কংগ্রেসি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মহিলা সংগঠনের শীর্ষে থেকেও দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। তাছাড়াও সন্তোষ দেবের কন্যা হিসেবেও দেশের রাজনীতিতে সুস্মিতার একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

ইস্তফা পত্রে সুস্মিতা লেখেন, ‘‌আমি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে আমার তিন দশকের দীর্ঘ সম্পর্ককে লালন করি। আমি পার্টির সকল নেতা, সদস্য এবং কর্মীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি যারা আমার যাত্রা স্মরণীয় করেছেন। ম্যাডাম, আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই আপনার নির্দেশনার জন্য এবং আমাকে যে সুযোগ দিয়েছেন তার জন্য।’‌ মহিলা মুখ হিসেবেই অসমে সুস্মিতা দেবই হতে পারেন তৃণমূলের ট্রাম্প কার্ড। এ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’ স্লোগানে ভর করে তৃতীয় বারের মতো ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে অসমেও একজন মহিলাকে সামনে রেখে এগোলে ডিভিডেন্ট মিলতে পারে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।